বনদস্যুদের তৎপরতা ফের বেড়েছে সুন্দরবনে। মুক্তিপণ দাবিতে নতুন করে কাঁকড়া আহরণ করা ১০ জেলেকে অপহরণ করা হয়েছে।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বেড়ীর খাল এবং অরমাল খাল থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের একটি বনদস্যু বহিনীর সদস্যরা মুক্তিপণ দাবিতে এসব জেলেদের অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
বনদস্যুরা এসময় জেলেদের কাছ থেকে প্রায় ৭ মন কাকড়া, ২০টি মোবাইল ফোন ও দুটি জেলে নৌকা নিয়ে গেছে।
গত ১৫ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিপণের দাবিতে ১০ জেলেকে অপহরণ ও ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও শনিবার রাতে অন্য জেলেরা বাড়ি ফিরে আসলে ঘটনাটি প্রকাশ পায়।
এলিট ফোর্স র্যাবের তৎপরতায় সুন্দরবনের একর পর এক বনদস্যু বাহিনীগুলোর সদস্যরা আগ্নেয়াস্ত্র-গোলাবারুদ জমা দিয়ে আত্মসমর্পণে বাধ্য হবার পর ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। সুন্দরবন বিভাগও এতথ্য নিশ্চিত করেছে।
বনদস্যুদের ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফিরে আসা জেলেরা জানান, পূর্ব সুন্দরনর বিভাগের চাঁদপাই, জিউধারা ও ধানসাগর স্টেশন থেকে পারমিট নিয়ে ১০টি নৌকায় করে তারা ১৫ ডিসেম্বর রাতে বেড়ীর খাল ও অরমাল খালে কাঁকড়া শিকার করছিলেন।
এসময় নয়জনের একটি অজ্ঞাত পরিচয়ের একটি বনদস্যু বহিনীর দল আগ্নেআস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়।
বনদস্যুরা জেলেদের কাছে থাকা ২০টি মোবাইল ফোন, নগদ টাকা ও তাদের শিকার করা প্রায় ৭মন কাঁকড়াসহ দুইটি নৌকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর মাথাপিছু ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণের দাবিতে প্রতিটি নৌকা থেকে একজন করে ১০জন জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বনদস্যুরা।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে টাকা নিয়ে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ না দিলে অপহৃত জেলেদের হত্যা করা হবে বলেও বনদস্যুরা হুমকি দেয়।
অপহৃত জেলেদের মধ্যে থেকে তিনজনের নাম জানা গেছে। তারা হচ্ছে, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার জিউধরা গ্রামের আসাদুল হাওলাদার (৩৫), ডৌয়াতলা গ্রামের হানু (৪৫) ও বাগেরহাট সদরের ডেমা এলাকার সোহেল (৩৫)। এ ঘটনায় অপহৃত জেলেদের পরিবারের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণার পর বনদস্যুদের কোনো তৎপরতা ছিল না।
গত ১৫ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিপণের দাবিতে সুন্দরবন থেকে ১০ জেলেকে অপহরণ ও ডাকাতির ঘটনা জেলেদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। বিষয়টি ইতিমধ্যেই র্যাব, কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশকে জানানো হয়েছে।
মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের গোয়েন্দা কর্মকর্তা লে. কমান্ডর মামুনুর রহমান জানান, সুন্দরবনে নতুন করে মুক্তিপণের দাবি জেরের আপহরণ ও বনদস্যুদের তৎপরতার বিষয়ে জেলেদের সাথে কথা বলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেএন/পিআর