‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় ভূমিকা রাখার ১০ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন সংগঠনটির অভিভাবক আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনার কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ছাত্রলীগের সব ইউনিটের নেতাকর্মীদের প্রতি ১০টি সাংগঠনিক নির্দেশনা তুলে ধরা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
ছাত্রলীগের দেওয়া ১০ নির্দেশনা হলো
১. সংগঠনের ব্যানার, পোস্টার ও অন্যান্য ক্ষেত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ব্যতীত অন্য কোনো ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাংগঠনিক নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
২. জেলা, মহানগর, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সম্মেলন ব্যতীত তাদের অধীনস্থ কোনো ইউনিটের কমিটি গঠন করবে না। যে সকল ইউনিটের কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের কেন্দ্র/সংশ্লিষ্ট ইউনিটে পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমাদানের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। গঠনতন্ত্রে উল্লেখিত সংখ্যার অধিক সদস্য নিয়ে কোনো ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে না।
৩. গঠনতন্ত্র উল্লেখিত সময়ে প্রতিটি ইউনিটকে অবশ্যই নিয়মিত নির্বাহী সভা আয়োজন করতে হবে।
৪. সংশ্লিষ্ট ইউনিটের নেতৃবৃন্দকে অবশ্যই নিজ নিজ ইউনিটে সার্বক্ষণিক উপস্থিত থাকতে হবে এবং সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে উত্তরোত্তর গতিশীলতা বৃদ্ধি করতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৫. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিটি সাংগঠনিক ইউনিটের নামে একটি পেজ খুলতে হবে; যার মাধ্যমে নিয়মিত কর্মকাণ্ড, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড প্রচার ও দেশবিরোধী সকল অপচেষ্টা ও গুজব-প্রোপাগান্ডার জবাব দিতে হবে। পাশাপাশি নেতা-কর্মীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকেও এসব প্রচারণা চালাতে হবে।
৬. বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল, মাদ্রাসা প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক পরিবেশ বজায় রেখে সাংগঠনিক কর্মসূচি পরিচালনা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয়ের প্রতি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
৭. স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে’ স্মার্ট ক্যাম্পাস’-এ রূপদান করতে ও শিক্ষার্থীদের যুগোপযোগী উপায়ে দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক কর্মসূচি হাতে নিতে হবে ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
৮. স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি, মৌলবাদ-জঙ্গিবাদে সংশ্লিষ্টরা যেন নামে-বেনামে শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করতে না পারে সে লক্ষ্যে উপযুক্ত সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও সাহিত্য কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে।
৯. শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্মকে তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ করতে নানামুখী উৎসব, প্রতিযোগিতা, সেমিনার, কর্মশালা, প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্যোগ নিতে হবে।
১০. জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সংকট মোকাবিলায় বৃক্ষরোপণ, বায়ু-পানি-মাটি-পরিবেশ-শব্দ দূষণ রোধে ভূমিকা রাখা, পতিত জমিতে চাষাবাদ, জ্বালানি সাশ্রয়ে বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস-তেলের ব্যবহারে যত্নশীল হওয়া, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সাংগঠনিক ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে মিতব্যয়ী হওয়া ইত্যাদি বিষয়ে প্রতিটি ইউনিট শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহিত করবে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) ছাত্রলীদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাম ঘোষণা হয় সাদ্দাম হোসেন এবং শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের। তারা দুজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে এদিন রাতে তাদের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এর আগে, ৬ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন হয়। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ঘোষণা করা হয় মাজহারুল কবির শয়নকে। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন তানভীর হাসান সৈকত।
এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রিয়াজ মাহমুদকে। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন সাগর আহমেদ। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজীবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে সজল কুণ্ডুকে।
জেএন/পিআর