রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকার একটি বাসা থেকে নারী সাংবাদিকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই নারীর নাম শবনম শারমিন।
তিনি একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মঙ্গলবার রাতে হাতিরঝিলের ওই বাড়ির দরজা ভেঙে নারী সাংবাদিকের মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
শবনমের মৃত্যুর ঘটনায় তার বড় বোন বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। সেখানে অভিযুক্ত হিসেবে তার বোনের স্বামী (শবনমের স্বামী) সাইদুল ইসলামের নাম রয়েছে।
পুলিশ বলছে, মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে আত্মগোপনে আছেন সাইদুল। তাকে পাওয়া গেলে ঘটনার বিস্তরিত জানা যাবে।
ঝিনাইদহ শহরের মডার্নপাড়ার হারুন অর রশিদের মেয়ে শবনম। তার স্বামী সাইদুল ইসলাম একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সাবেক অপরাধ বিষয়ক প্রতিবেদক।
হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘খবর পেয়ে বড় মগবাজার ৩০৮ নম্বর বাড়ির পঞ্চম তলার একটি বাসার দরজা ভেঙে ভেতর থেকে ওই নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। লাশটি পচে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, চার-পাঁচদিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বামী সাইদুল ইসলামের সঙ্গে চলতি বছরের মার্চে বাসাটি তারা ভাড়া নেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ঘটনাস্থল থেকে সিআইডির ফরেনসিক টিম বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে ও বিস্তারিত তদন্তের পর তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বলা যাবে।’
হাতিরঝিল থানার ওসি আব্দুর রশিদ বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের সময় নিহতের বাসায় কেউ ছিল না। তার স্বামী পলাতক রয়েছেন।’
মামলার এজাহারে নিহতের বোন উল্লেখ করেছেন, ‘১৮ ডিসেম্বর শবনম জানান অফিসের কাজে তিনি ঢাকার বাইরে আছেন। ফিরতে বেশ কয়েকদিন দেরি হবে। পরে ২৩ ডিসেম্বর রাতে শবনমের মোবাইলে ফোন করা হলে তা সে রিসিভ করেনি। পরে বোনের জামাই সাইদুলের কাছে কারণ জানতে চাওয়া হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে গালিগালাজ করেন। অনেক চেষ্টার পর ঘটনা দিন বাসার ঠিকানা পাওয়ার পর সেখানে গিয়ে দেখা যায় ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ। কিন্তু রুম থেকে পঁচা গন্ধ বের হচ্ছে। পরে বাড়ির মালিক ও পুলিশের সহায়তায় রুমে প্রবেশ করে দেখা যায় তার বোনের দেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে। যাতে পচন ধরেছে।’
এজাহারে আরও বলা হয়, নিহত শবনমকে তার স্বামী শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। কারণ সাইদুল শবনমকে তালাক দেবার চেষ্টা করছিলেন। এজন্যই তার বোন আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে।
জেএন/এমআর