চট্টগ্রাম রাঙ্গুনিয়ায় অবৈধ ইটভাটার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সাংবাদিক আবু আজাদের ওপর হামলার ঘটনায় আসামিদের গ্রেফতার হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা ১২টার দিকে চট্টগ্রামের দেওয়ানজি পুকুর পাড়ের নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
অস্ত্রের মুখে সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হবে কিনা– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “সাংবাদিককে মারধর করেছে সেটা আমি জানি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিরা গ্রেফতার হবে। সাংবাদিক হোক আর যেই হোক, যে কাউকে মারধর করা দণ্ডনীয় অপরাধ। আমি যতটুকু জানি, পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে (একজন গ্রেফতার হয়েছে)।”
এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার বাকি আসামিদেরও গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে বলেন জানান তিনি।
গত রোববার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে রাঙ্গুনিয়ায় অবৈধ ইট ভাটার ছবি তোলায় স্থানীয় ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন তালুকদার মোহনসহ ৫-৬ জন পিস্তল ঠেকিয়ে সাংবাদিক আবু আজাদকে মারধর করে। অস্ত্রের মুখে মোহন ওই সাংবাদিককে গাড়িতে তুলে স্থানীয় মঘাছড়ি বাজারে নিয়েও কয়েক দফা পেটান। এরপর তার কার্যালয়ে বেঁধে রেখে নির্যাতন করে। তার মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলে এবং মানিব্যাগ ও আইডি কার্ড- সব কেড়ে নিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। মারধরের এক পর্যায়ে মোহনের মোবাইল ফোন দিয়ে আবু আজাদের সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে ফোনে কথাও বলে। এরপর ওই সাংবাদিকের পকেটে মোহন নিজের ভিজিটিং কার্ড ঢুকিয়ে দিয়ে ক্ষমতা থাকলে কিছু করতে বলে হুমকিও দেয়।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকালে রাঙ্গুনিয়া মডেল থানায় হতায় চেষ্টা, অপহরণ, টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়া, মারধর এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে বাদি হয়ে মামলা করেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক আবু আজাদ। মামলায় ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মহিউদ্দিন তালুকদার মোহন (৪০), চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন চৌধুরী (৫৫), ইটভাটার ম্যানেজার কামরান (৩০), মোহনের সহযোগী কাঞ্চন তুড়ির (৩০) নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাত আরো ৫-৭ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে অভিযুক্ত করা হয়। ওইদিন রাতেই আসামি কাঞ্চন তুড়িকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মতবিনিময় সভায় রাঙ্গুনিয়ায় অবৈধ ইটভাটার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সাবেক বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সেগুলো চলমান আছে। অনেককে জরিমানা করা হয়েছে। অনেকগুলো ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
দ্বিতীয় বারের মতো আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর ড. হাছান মাহমুদের প্রথম চট্টগ্রাম সফর এটি। বর্তমান ইস্যুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন তিনি। এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
জেএন/এফও/এমআর