আকবরশাহ এলাকার মাদক ব্যবসায়ী আবুল কাশেম আলমগীরকে গ্রেফতার করার পর গা ঢাকা দিয়েছে ওই এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা। আকবরশাহ পাহাড়ি এলাকাসহ স্থানীয় বস্তিগুলোর মাদকের আখড়া থেকে অক্টোবর মাসে গ্রেফতার করা হয় ৩২ মাদক কারবারীকে। মাদক উদ্ধারে দায়ের হওয়া ২৩টি মামলায় আসামি করা হয়েছে ৩৫ জনকে। এর মধ্যে রয়েছে একজন নারী মাদক ব্যবসায়ীও। ২৩ দফা অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার ইয়াবা।
পুলিশ বলছে, আলমগীর গ্রেফতার হলেই চলবে না, আকবরশাহ এলাকায় মাদক নির্মূল করতে হলে আইনের আওতায় আনতে হবে ইয়াবা সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য নূরে আলম নুরু ও জানে আলমকেও।
আকবরশাহ থানা সূত্র জানায়, আকবরশাহ এলাকার মাদক ব্যবসা সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য আবুল কাশেম আলমগীরকে ফিরোজ শাহ কলোনীর এক নম্বর ঝিল এলাকা থেকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয় গত ২৮ সেপ্টেম্বর। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি এলজি ও দুই রাউন্ড গুলি। তাকে গ্রেফতারের পর থেকে গা ঢাকা দেয় সিন্ডিকেটের অন্য দুই সদস্য নূরে আলম নুরু ও জানে আলমসহ চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা। পুলিশ তাদের গ্রেফতারে দফায় দফায় অভিযান চালালেও এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে তারা।
এর আগে ২৮ সেপ্টেম্বর আলমগীরকে গ্রেফতারের পর ১৮ অক্টোবর আলমগীরের স্ত্রী রুবি বেগম আকবরশাহ থানার ওসি জসিম উদ্দীনসহ ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন চট্টগ্রাম মহানগর বিশেষ জজ আদালতে। এ অভিযোগে এসআই আলাউদ্দিন, আশহাদুল ইসলাম, এএসআই সাইফুল ইসলাম, আবু বক্কর সিদ্দিক ও কনস্টেবল নুরুল আলমেরও নাম দেয়া হয়। পুলিশকে চাপে রেখে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার এ কৌশল অবশ্য ধোপে টেকেনি। ১ নভেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধার আদালত অভিযোগটি খারিজ করে দেন।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আকবরশাহ থানার মাদক সম্রাজ্ঞী ফাতেমা খাতুন এখন কারাগারে। গত ১ অক্টোবর সিটি গেইট এলাকায় সাড়ে ৪ হাজার ইয়াবা নিয়ে আকবরশাহ থানার জালে আটকা পড়েন তিনি। ৪ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয় ইমাজ উদ্দিন ও মিজানুর রহমান রাসেলকে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ২ হাজার দুইশ ইয়াবা। সিটিগেইট পুলিশ বক্সের সামনে ২ হাজার ৫০টি ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয় দেলোয়ার হোসেন ও বেলাল হোসেন। কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ইয়াবা পাচারের সময় ২ হাজার পিস ইয়াবা নিয়ে ধরা পড়ে জিয়াউল করিম। ২৫ অক্টোবর ৬ হাজার পিস ইয়াবা নিয়ে গ্রেফতার হন ইসহাক শেখ শিপলু ও সাদাবি মাহফুজ। ১ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২৩টি অভিযানে গ্রেফতার করা হয় ৩৫ মাদক ব্যবসায়ীকে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ২৯ হাজার ৮২৩ পিস ইয়াবা।
এ বিষয়ে আকবরশাহ থানার ওসি জসিম উদ্দীন জয়নিউজকে বলেন, নূরে আলম ১৮ মামলার আসামি। তার ভাই জানে আলমের বিরুদ্ধে রয়েছে ১২টি মামলা। তাদের বোন রুবি বেগমের বিরুদ্ধে রয়েছে ২টি মামলা। ভগ্নিপতি আবুল কাশেম আলমগীরের বিরুদ্ধে রয়েছে ৪টি মামলা। ওসি আরো বলেন, আকবরশাহ এলাকায় মাদক ব্যবসার বড় একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করে তারা। আলমগীর গ্রেফতারের পর থেকে এ এলাকার অনেক মাদক ব্যবসায়ী গা ঢাকা দিয়েছে। আমরা গত একমাসে অসংখ্য অভিযান চালিয়েছি। গ্রেফতার করেছি ৩৫ মাদক ব্যবসায়ীকে। জানে আলম ও নূরে আলমকে গ্রেফতারে আমরা চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
জয়নিউজ/এফও/এফএম/জেডএইচ