দশ দফা দাবি বাস্তবায়ন এবং বিদ্যুতের দাম কমানোর দাবিতে আগামী ১৬ জানুয়ারি সারা দেশে জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করবে বিএনপি। বিএনপির এ আন্দোলনের ঘোষণাকে ‘ডিম পাড়ার আগে হাঁসের ডাকের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, ‘হাঁস যখন ডিম পাড়ে, ডিম পাড়ার আগে অনেক হাঁকডাক দেয়। বিএনপির ১৬ তারিখের সমাবেশ বা মিছিল ওই হাঁস ডিম পাড়ার আগে যে হাঁকডাক দেয়, এটা ছাড়া অন্য কিছু না। কয়েক দিন আগে বিএনপি যে অবস্থান কর্মসূচি পালন করল, সেখানে দেখা গেছে যত হাঁকডাক দিয়েছিল, তার কিছুই না।’
আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহী সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জনগণের রায় নিয়ে সরকার গঠনের পর থেকেই বিএনপি কঠোর, কঠোরতর এবং বিভিন্ন সময় নানা ধরনের নাম দিয়ে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। একবার আন্দোলন করার পর বলে যে, শীতের পরে আন্দোলন হবে, গ্রীষ্মের পরে হবে, বর্ষার পরে হবে, বার্ষিক পরীক্ষার পরে হবে। গত ১৪ বছর ধরে তারা যে ঘোষণা দিয়েছে, আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে তাদের আন্দোলন সেটার ধারাবাহিকতা ছাড়া কিছু না।’
আগামী ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা নিয়ে আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘আমরা জনগণকে নিয়ে রাজনীতি করি, আমাদের ভিত্তি জনগণ। সমগ্র বাংলাদেশে যে সাম্প্রতিক সমাবেশ-জনসভাগুলো করেছি, সেখানে লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ। জনগণ যে আমাদের সঙ্গে আছে, সেটি সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে প্রতীয়মান হয়েছে। আগামী ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে যে জনসভা হতে যাচ্ছে, সেদিন রাজশাহী শহর লোকে লোকারণ্য হয়ে যাবে। আমরা যদিও মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশের ডাক দিয়েছি, কিন্তু পুরো শহরটাই সেদিন সমাবেশে রূপান্তরিত হবে। লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ হবে।’
বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘সমগ্র পৃথিবীব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সমগ্র পৃথিবীতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। কন্টিনেন্টাল ইউরোপে, আমেরিকায় এবং ইউকেতে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে সেখানে বিদ্যুতের রেশনিং করা হচ্ছে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। ইউরোপ, কিংবা কন্টিনেন্টাল ইউরোপ, ইউকে এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে, আমাদের দেশে সেইভাবে দাম বাড়ানো হয়নি। বিদ্যুৎ খাতে আমাদের সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। জনগণের যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য সুলভ মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্যই হাজার হাজার কোটি টাকা সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। সেই ভর্তুকিটা কিছুটা কমানোর জন্য সামান্য বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সেটিও অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় কম।’
আওয়ামী লীগের সঙ্গে ইসলামপন্থী দলগুলোর সঙ্গে কোন সমঝোতা হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে এই দেশে অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতীক। আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের প্রতীক। সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনার জন্যই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছে আওয়ামী লীগ। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত আরও মজবুত করার লক্ষ্যে কাজ করছে আওয়ামী লীগ। আপনারা যে প্রশ্ন করছেন তা অবান্তর।’
এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, খাদ্যমন্ত্রী ড. সাধন চন্দ্র মজুমদার, তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেএন/এমআর