পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্যকে তুলে ধরার লক্ষ্যে শুক্রবার(১৩ জানুয়ারী) বিকাল সাড়ে ৩ হতে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলা ওয়াগ্গাছড়া রিভারভিউ পার্ক এন্ড পিকনিক স্পটের ম্যাডিসন স্কোয়ার মঞ্চে উদ্বোধন করা হলো সাংস্কৃতিক উৎসব “২০২৩”। কাপ্তাই ব্যাটালিয়ন (৪১ বিজিবি) এই সাংস্কৃতিক উৎসব এর আয়োজন করেন।
উৎসব এর উদ্বোধনী দিনে সংগীত শিল্পী জ্যাকলিন তঞ্চঙ্গ্যার সঞ্চালনায় লাকি তঞ্চঙ্গ্যা ও সুর্যসেন তঞ্চঙ্গ্যার পরিচালনায় ১০০ নং ওয়াগ্গা মৌজায় বসবাসরত তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের শিল্পীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত হয়ে তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের জীবনধারা, বিষু উৎসবের নাচ ও গান, তঞ্চঙ্গ্যা ভাষার দেশের গান এবং তাদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন করেন। এসময় তুমুল করতালিতে পার্কে আগত দর্শকরা এই অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
কাপ্তাই ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল সাব্বির আহমেদ, এএসসি প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে এই উৎসব এর উদ্বোধন করেন। এসময় সীমান্ত পরিবার কল্যান সংস্থা (সীপকস) কাপ্তাই উপ শাখার সাধারণ সম্পাদিকা মৌটুসী খন্দকার, ১০০ নং ওয়াগ্গা মৌজার হেডম্যান অরুণ তালুকদার, উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি, কাপ্তাইয়ের সাধারণ সম্পাদক ঝুলন দত্ত সহ বিভিন্ন মৌজার হেডম্যান, কার্বারী, মহিলা ও পুরুষ এবং বিজিবির পদস্থ কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত থেকে এই নান্দনিক পরিবেশনা উপভোগ করেন।
বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্নেল সাব্বির আহমেদ এএসসি জানান, ব্যাটালিয়ন এর অধীন ৬ টি মৌজায় বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরার জন্য এবং তাদের শিল্পীদের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার জন্য আমাদের আজকের এই আয়োজন। সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার ও শনিবার এই পার্কে সাংস্কৃতিক উৎসব চলবে বলে তিনি জানান।
১০০ নং ওয়াগ্গা মৌজার হেডম্যান অরুণ তালুকদার জানান, আমাদের সংস্কৃতিকে জনসমক্ষে তুলে ধরার জন্য কাপ্তাই বিজিবির এই আয়োজনকে আমরা মৌজাবাসীর পক্ষ হতে সাধুবাদ জানাই। আজকে আমাদের তঞ্চঙ্গ্যা শিল্পীরা তাদের প্রতিভাকে তুলে ধরতে পেরেছে।
উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি, কাপ্তাইয়ের সাধারণ সম্পাদক ও সাংস্কৃতিক উৎসব এর সমন্বয়ক ঝুলন দত্ত জানান, পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রতিভা গুলোকে একত্র করে এনে একটি সুন্দর সাজানো গোছানে মঞ্চে তাদের প্রতিভাকে বিকশিত করার যেই সুযোগ বিজিবি করে দিয়েছে সত্যিই তাঁরা প্রশংসার দাবিদার। আমরা আশা করছি, সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতায় বিজিবি ভবিষ্যতে আরোও এগিয়ে আসবে।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া সংগীতশিল্পি ও তঞ্চগ্যা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা জানান, আকাশ সংস্কৃতির দৌরত্বে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য অনেকটা হারিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের সংস্কৃতিকে সকলের সামনে তুলে ধরার জন্য কাপ্তাই বিজিবি যেই সুযোগ করে দিয়েছে তাঁর জন্য বিজিবিকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।
প্রসঙ্গতঃ কাপ্তাই বিজিবির আয়োজনে এই সাংস্কৃতিক উৎসবে আগামী ২০ জানুয়ারি রাইখালী মৌজা এবং ২১ জানুয়ারি নারানগিরি মৌজার শিল্পীরা তাদের পরিবেশনা পরিবেশন করবেন বলে আয়োজকরা জানান। এছাড়া আগামী ৩ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সাপ্তাহিক বন্ধের দিনে এই সাংস্কৃতিক উৎসব চলবে বলে জানা যায়।
জেএন/ঝুলন/এফও