টানা দ্বিতীয়বারের মতো আইসিসির ওয়ানডের বর্ষসেরা ক্রিকেটার হয়েছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। অন্যদিকে টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে বর্ষসেরা হলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ও অলরাউন্ডার বেন স্টোকস।
বাবর আজম : তিনি ৯ ম্যাচে করেছেন ৬৭৯ রান। তিন সেঞ্চুরিতে তার গড় ছিল ৮৪.৮৭। তুলনা করলে ২০২১ সালের চেয়েও বেশি দ্যুতি ছড়িয়েছে বাবরের ব্যাট।
সেই যে ২০২১ সালের জুলাইয়ে ব্যাটারদের র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানটা দখল করেছেন। বর্তমান ফর্ম অনুযায়ী দ্রুতই আসনটা ছেড়ে দেবেন, এমনটাও মনে হচ্ছে না।
হতে পারে পুরো বছরে মাত্র ৯টি ম্যাচ খেলেছেন। কিন্তু ২৮ বছর বয়সী যে কয়টি ম্যাচ খেলেছেন; সেখানে প্রভাব বিস্তার করেছেন বলেই তাকে বর্ষসেরা করতে দ্বিতীয়বার ভাবতে হয়নি। ৩ সেঞ্চুরির পাশাপাশি হাফসেঞ্চুরি আছে ৫টি! ব্যাট হাতে শুধু একবার ব্যর্থ হয়েছেন।
শুধু যে ব্যাট হাতেই প্রভাব বিস্তার করেছেন এমন নয়। তার নেতৃত্বগুণে পাকিস্তান পুরো বছরে হার হজম করেছে মাত্র একটি! আর সেটা এসেছে লাহোরে গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।
সবচেয়ে স্মরণীয় ম্যাচ বলতে ঘরের মাঠে এই অজিদের বিপক্ষেই। মার্চের শেষ দিকে ১১৪ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেছেন। সিরিজ ওপেনারে হারের পর ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচেই জ্বলে উঠে বাবরের ব্যাট। তার ওপর ভর করে ৩৪৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে।
শুরুতে ওপেনার ফখর জামান ও ইমাম উল হকের ১১৮ রানের জুটি মঞ্চটা গড়ে দিয়েছে। তার পর রান তাড়ায় নিজের মাস্টার ক্লাস ব্যাটিংটা উপহার দিয়েছেন। তখন ১৮৭ বলে দলের প্রয়োজন ছিল ২৩১! দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বাবর ৭৩ বলে তুলে নেন সেঞ্চুরি। ওয়ানডেতে যা তাঁর দ্রুততম।
বেন স্টোকস : গত বছর টেস্ট ক্রিকেটকে নিজের মতো করে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন এই ক্রিকেটার। শুধু সংখ্যার দিক দিয়েই নয়। ইংল্যান্ডের হেড কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে সঙ্গে নিয়ে পুরো ইংলিশ টেস্ট দলের ভাগ্য, ফর্ম ও স্টাইল বদলে দিতে ভূমিকা রেখেছেন।
যা বছরজুড়ে তাকে আলোচিত করে রেখেছে। তাই আইসিসির বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটারের স্বীকৃতি জুটেছে তার। ইংল্যান্ড অধিনায়ক ও অলরাউন্ডার স্টোকস গত বছর ৩৬.২৫ গড়ে ৮৭০ রান করেছেন। ৩১.১০ গড়ে উইকেট নিয়েছেন ২৬টি।
অনেক সময় ক্রিকেটটা ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়েও বেশি কিছু। স্টোকস যেমনটা ২০২২ সালে করে দেখিয়েছেন। দলসহ খেলোয়াড়রা আগেও আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলেছেন।
কিন্তু বেন স্টোকস ব্যাট, বলসহ মাঠে বিনোদনের পাশাপাশি আক্রমণাত্মক মনোভাবকে নিয়ে গেছেন অন্য পর্যায়ে। নেতৃত্ব পাওয়ার পর ১০ টেস্টের মধ্যে ৯টিতেই ইংল্যান্ড দলকে জিতিয়েছেন।
নিউজিল্যান্ড ও ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয় সহ ভারতের বিপক্ষে পিছিয়ে যাওয়া টেস্ট সিরিজটি ২-২ সমতায় শেষ করতে পেরেছেন।
পাকিস্তানের বিপক্ষে অ্যাওয়ে টেস্টে জন্ম দিয়েছেন ইতিহাস। তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতেছেন; যা পাকিস্তানে ইংলিশদের সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ের নজির।
অধিনায়কত্বের পাশাপাশি ব্যাট-বল হাতেও দারুণ সময় কাটিয়েছেন তিনি। ৩৬.২৫ গড়ে ৮৭০ রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট ছিল ৭১.২১। রয়েছে দুটি সেঞ্চুরি।
পুরো বছরে তার আলোচিত ইনিংসটি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে। প্রথম টেস্টে পরাজয়ের পর দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১০৩ রান করে দলকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেছে। তারপর বল হাতে একই টেস্টে নিয়েছেন ৪ উইকেট! সিরিজে তার মোট শিকার ছিল ১০ উইকেট।
জেএন/পিআর