দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি এবং কানাডা-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি যৌথ আয়োজনে “কানাডা-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণ” বিষয়ক সভা ৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলস বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির অংশহিসেবে কানাডা এ অঞ্চলের জন্য ২০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে। বাংলাদেশ এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই কানাডার সাথে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কোন্নয়নের এখনই উপযুক্ত সময়। এই লক্ষ্যে দু’দেশের তিন জন করে ছয় জনের একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, উভয়দেশের মধ্যে বিনিয়োগে বৈচিত্র্যতা আনতে কানাডা আগ্রহী। তাছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ইনফরমেশন টেকনোলজি, ব্লু ও গ্রীণ টেকনোলজি, নবায়নযোগ্য জ্বালানীসহ বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগে আগ্রহী কানাডা। বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক অঞ্চলে এফডিআই অর্থাৎ সরাসরি কানাডিয়ান বিনিয়োগ হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে শীঘ্রই কানাডার ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম’র সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলস একথা বলেন।
এ সময় চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি তরফদার মোঃ রুহুল আমিন ও সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, কানাডা-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি মাসুদ রহমান, চেম্বার পরিচালক নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, প্রাক্তন সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর হাজ্জাজ, প্রাক্তন পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, উইম্যান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি আবিদা মোস্তফা, জেএফ (বাংলাদেশ)’র সিইও রাহবার আলম আনোয়ার, হাইকমিশনের সিনিয়র ট্রেড কমিশনার অ্যাঞ্জেলা ডার্ক এবং রিলায়েন্স এসেট্স্ এন্ড ডেভেলাপমেন্টস (বিডি) লিঃ’র পরিচালক ওমর মুক্তাদির বক্তব্য রাখেন।
এ সময় চেম্বার পরিচালকবৃন্দ মোঃ অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), অঞ্জন শেখর দাশ, মোঃ ওমর ফারুক ও মোহাম্মদ নাসিরুল আলম (ফাহিম)-সহ বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে কানাডা। দু’দেশের মধ্যে প্রায় ২.২ থেকে ২.৪ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য সংঘটিত হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রায় ১.৩ থেকে ১.৪ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি এবং কানাডা থেকে বাংলাদেশ ১.০ বিলিয়ন ডলার আমদানি করছে। বাংলাদেশ থেকে তৈরিপোশাক রপ্তানি হলেও পণ্য বৈচিত্র্যকরণের জন্য নন-ট্রেডিশনাল পণ্যের জন্য কানাডার সহযোগিতা কামনা করেন।
চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি তরফদার মোঃ রুহুল আমিন বলেন, চট্টগ্রামে বাস্তবায়িত হচ্ছে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং দেশের সর্ববৃহৎ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর। এসব সুবিধা কাজে লাগিয়ে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির আওতায় চট্টগ্রামে বিনিয়োগ করার আহবান জানান তিনি। এছাড়া কানাডিয়ান ব্যবসায়ীদের তথ্য প্রাপ্তিতে সুবিধার জন্য চিটাগাং চেম্বারে কানাডিয়ান হেল্প ডেস্ক চালু করারও আহবান জানান তরফদার মোঃ রুহুল আমিন।
চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, কানাডা হচ্ছে এগ্রো প্রসেসিং ও এগ্রো টেকনোলজি সলিউশনে পৃথিবীর অন্যতম দেশ। তাই বাংলাদেশের সাথে এগ্রো প্রসেসিং ও এগ্রো টেকনোলজি শেয়ারিং ও গ্রীণ এনার্জি সলিউশনে বিনিয়োগ করার আহবান জানান তিনি। এছাড়া দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে কানাডা-বাংলাদেশ চেম্বারের সাথে চিটাগাং চেম্বারের কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কানাডা-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি মাসুদ রহমান বলেন, বাংলাদেশে রয়েছে শুল্কমুক্ত সুবিধা। এই সুবিধা কাজে লাগাতে হলে পণ্য বৈচিত্র্যকরণে উপর গুরুত্বারোপ করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশে কানাডিয়ান বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি (বেজা) কানাডায় কান্ট্রি ডেস্ক চালু করেছে। এছাড়া উভয়দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে দ্বিপাক্ষিক পলিসি এগ্রিমেন্টের উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
জেএন/এফও/এমআর