বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের নবম আসরের কোয়ালিফাইয়ার নিশ্চিত করলো মাশরাফি-মুশফিকের সিলেট স্ট্রাইকার্স। পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষ দুই অবস্থানে থাকায় কোয়ালিফাইয়ার খেলবে সিলেট।
আজ টুর্নামেন্টের ৩৯তম ম্যাচে সিলেট ৬ উইকেটে হারিয়েছে খুলনা টাইগার্সকে। এই জয়ে লিগ পর্বে নিজেদের শেষ ও ১২ ম্যাচ খেলে ৯ জয় ও ৩ হারে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে থাকলো সিলেট। ১১ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, ১১ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়স্থানে ফরচুন বরিশাল এবং ১০ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থস্থানে আছে রংপুর রাইডার্স। সিলেটের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে কোয়ালিফাইয়ার নিশ্চিতের আশায় আছে কুমিল্লা-বরিশাল ও রংপুর। এই ম্যাচ হেরে ১১ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে থাকলো খুলনা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে আজ টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক ওয়েস্ট ইন্ডিজের শাই হোপ।
ব্যাট হাতে নেমে পাওয়ার প্লেতে ৩১ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারায় খুলনা। ওপেনার মুনিম শাহরিয়ারকে ৩ রানে সিলেটের পাকিস্তানী স্পিনার ইমাদ ওয়াসিম, হোপকে ৯ রানে পেসার তানজিম হাসান সাকিব ও আয়ারল্যান্ডের এন্ডি বলবির্নিকে ৭ রানে আউট করেন রুবেল হোসেন। পাওয়ার-প্লে শেষ হবার পরও নিয়মিত বিরতি দিয়ে উইকেট হারায় খুলনা। ৭২ রানে ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে তাদের। পরের তিন উইকেটও ভাগাভাগি করেছেন সিলেটের ইমাদ-সাকিব ও রুবেল। ইয়াসির আলি ১২, সাব্বির রহমান-মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ৬ রান করে ফিরেন। ১৫তম ওভারের মধ্যে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে দ্রুত অলআউট হবার শঙ্কায় পড়ে খুলনা। সপ্তম উইকেটে ২৪ বলে ৩৬ রান যোগ করে খুলনার রান ১’শ পার করেন মাহমুদুল হাসান জয় ও নাহিদুল ইসলাম। ১৯তম ওভারে জয়কে সাজঘরে পাঠিয়ে জুটি ভাঙ্গেন সাকিব। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪১ বলে ৪১ রান করেন জয়। শেষ ওভারে নাহিদুলকে আউট করেন পাকিস্তানী পেসার মোহাম্মদ আমির। ৩টি চারে ১৭ বলে ২২ রান করেন নাহিদুল। পুরো ২০ ওভার ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১১৩ রানের মামুলি সংগ্রহ পায় খুলনা। সাকিব ২২ রানে ৩টি, রুবেল-ইমাদ ২টি করে ও আমির ১টি উইকেট নেন।
১১৪ রানের টার্গেটে শুরুটা ভালো হয়নি সিলেটের। তৃতীয় ওভারে ১০ রানের মধ্যে প্যাভিলিয়নে ফিরেন সিলেটের দুই ওপেনার তৌহিদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দ্বিতীয় ওভারে হৃদয়কে ৫ রানে আউট করেন সাইফুদ্দিন। পরের ওভারে শান্তকে ৩ রানে থামিয়ে দেন স্পিনার নাহিদুল।
শুরুতে চাপে পড়া সিলেটকে লড়াইয়ে ফেরাতে জুটি বাঁধেন জাকির হাসান ও মুশফিকুর রহিম। তাদের জুটিতে পাওয়ার-প্লেতে ৩১ রান পায় সিলেট। ১০ম ওভারে ৫০ রান স্পর্শ করে সিলেট। ১১তম ওভারে সিলেটের ইনিংসে প্রথম ছক্কা মারেন জাকির। ১৫তম ওভারে এবারের আসরে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন জাকির। এজন্য ৪৪ বল খেলেছেন তিনি। ১৬তম ওভারে সিলেটের রান ১শতে নেন জাকির ও মুশফিক। ঐ ওভারের চতুর্থ বলে স্পিনার হাসান মুরাদের বলে আউট হন জাকির। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৬ বলে ৫০ রান করেন জাকির। ওভারের শেষ বলে নিজের ভুলে রান আউট হন মুশফিক। ৪টি বাউন্ডারিতে ৩৫ বলে ৩৯ রান করেন মুশফিক। তৃতীয় উইকেটে ৮০ বলে ৯০ রান যোগ করেন জাকির ও মুশফিক। দলীয় ১০০ রানে জাকির-মুশফিকের বিদায়ের পর সিলেটের জয় নিশ্চিত করেন জিম্বাবুয়ের রায়ান বার্ল ও আফগানিস্তানের গুলবাদিন নাইব। বার্ল ৬ বলে ১২ ও নাইব ২ রানে অপরাজিত থাকেন। খুলনার নাহিদুল-সাইফুদ্দিন ও মুরাদ ১টি করে উইকেট নেন।
এই ম্যাচের আগে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত মানুষদের প্রার্থনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করে সিলেট-খুলনার ক্রিকেটার ও ম্যাচ অফিসিয়ালরা।
জেএন/এমআর