আরও একবার সাফল্যে রঙিন হতে ‘কৌশলগত আক্রমানত্মক’ ক্রিকেট অব্যাহত রাখার লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল থেকে সাগরিকাখ্যাত চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করছে বাংলাদেশ। দুপুর ২টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
সম্প্রতি প্রথম দুই ম্যাচ হেরে ২০১৬ সালের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারের পর টানা ছয় ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। এসময় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে সিরিজ হোয়াইটওয়াশ এড়ায় টাইগাররা।
এরপর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেথে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নেয় স্বাগতিকরা। সিরিজ জয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রতি ম্যাচেই নতুন-নতুন রেকর্ডের জন্ম দিয়েছে টাইগাররা।
বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে, বিশেষভাবে সাম্প্রতিক সময়ে তারা যেভাবে খেলছে তা নতুন সূচনার ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের মতে, এ সবকিছুই সম্ভব হয়েছে ‘কৌশলগত আক্রমণাত্মক’ ক্রিকেটের জন্য। যা ক্রিকেটারদের সাফল্যের জন্য ক্ষুধার্ত করে তুলেছিল ও যা তাদের পারফরমেন্স প্রদর্শনে বড় ভূমিকা রাখে।
হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আমার কাছে এটিকে নতুন যুগ বলে মনে হয় না। আমরা মুলত জয়ের লক্ষ্যে এভাবেই খেলতে চেয়েছি। আমরা আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলি না। আক্রমণাত্মক বলতে এমন নয় যে আমরা খেলতে নামবো আর যতটা সম্ভব জোড়ে মারবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আক্রমণাত্মক বলতে সার্বিকভাবে বিষয়টিকে বোঝানো হয়েছে। আমাদের ফিল্ড প্লেসিং, আমাদের শারীরিক ভাষা, আমাদের ফিল্ডিং, ব্যাটিং নির্বাচন আক্রমনাত্মক হওয়া উচিত। কৌশলগতভাবে আমরা আক্রমণাত্মক হচ্ছি। আমরা আমাদের নিজেদের সেরাটা উজার করে খেলতে চাই। আমি মনে করি, আক্রমনাত্মক এবং স্বাধীনতার সাথে খেললে এই দলটি সবসময়ই ভাল করবে।’
হাথুরুসিংহে স্পষ্ট করে বলেছেন, খেলোয়াড়দের মানসিক নিরাপত্তা তাদের সাফল্যের জন্য ক্ষুধার্ত করে তোলে।
তিনি আরও বলেন, ‘একটি শব্দ যা বিষয়টিকে নিশ্চিত করে তা হচ্ছে মানসিক নিরাপত্তা। এটি একটি বড় শব্দ। এটির মধ্যে বিভিন্ন বিষয় আছে, যেমন খেলোয়াড়দের জন্য যদি একটি পরিবেশ তৈরি করা যায় যেখানে তারা ফলাফল নিয়ে চিন্তা না করে খেলবে, পরবর্তী প্রতিক্রিয়া নিয়ে চিন্তা করবে না। শুধু কোচ বা নির্বাচক নয় এমনকি তাদের সতীর্থরাও করবে না, তারা যদি নতুন কিছু করার স্বাধীনতা পায় এবং যদি তারা ব্যর্থও হয় তাতেও সমস্যা নেই, তারা একই খেলোয়াড় এবং তাদেরকে আমরা বিশ্বাস করি।’
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অতীত ও সাম্প্রতিক সাফল্যের বিচারে টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রতিপক্ষকে বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ করবে বলেই ধারনা করা হচ্ছে। এই ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত পাঁচটি ম্যাচ খেলেছে দু’দল। সর্বশেষ ২০১৬ সালে দেখা হয়। ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম দেখায় জিতেছিলো আয়ারল্যান্ড। পরবর্তীতে ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিলো বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে ধর্মশালায় বিশ্বকাপে মঞ্চে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়।
নিজের লক্ষ্যের কথা জানিয়ে হাথুরুসিংহে বলেছেন, ‘আমরা একই ফলাফল চাই। এই্ বিষয় নিয়েই আমরা আলোচনা করি। আমরা একই প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে চচ্ছি যা আমাদের রয়েছে। আমরা যদি আমাদের প্রক্রিয়াটি ধরে রাখতে পারি, আমরা খুব ভাল দল এবং এটাই আমরা খেলোয়াড়দের কাছ থেকে আশা করি। আমরা প্রতিদিন সেই প্রক্রিয়াগুলোর উন্নতি করার চেষ্টা করছি।’
বাংলাদেশ দল : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন দাস, রনি তালুকদার, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, রিশাদ হোসেন ও জাকের আলী অনিক।
আয়ারল্যান্ড দল : অ্যান্ড্রু বলবির্নি (অধিনায়ক), মার্ক অ্যাডায়ার, রস অ্যাডায়ার, কার্টিস ক্যাম্পার, গ্যারেথ ডেলানি, জর্জ ডকরেল, গ্রাহাম হুম, ম্যাথিউ হামফ্রেস, ব্যারি ম্যাকার্থি, কনর অলফার্ট, পল স্টার্লিং, হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার, বেন হোয়াইট ও ক্রেইগ ইয়ং।
জেএন/এমআর