ভেনামি চিংড়ি বাণিজ্যিক চাষের অনুমতি পেলো

এশিয়ার চিংড়ি রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশে এবার বাণিজ্যিকভাবে ভেনামি চিংড়ি চাষের অনুমতি দিয়েছে সরকার।

- Advertisement -

শুক্রবার (৩১ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক এস এম হুমায়ুন কবির।

- Advertisement -google news follower

তিনি জানান, বুধবার (২৯ মার্চ) মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. হেমায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত ভেনামি চিংড়ির চাষের অনুমতি পত্র মৎস্য বিভাগের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে ভেনামি চিংড়ির চাষের জন্য ‘বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভিত্তিতে চিংড়ি চাষ নির্দেশিকা ও অনুমতি দেওয়া হয়।

পরীক্ষামূলক ভেনামি চিংড়ি চাষে সফল চাষি ও খুলনার চিংড়ি রপ্তানিকারকরা দীর্ঘদিন ধরে এর বাণিজ্যিক চাষের দাবি করে আসছিলেন। অবশেষে তাদের সে চাওয়া পূরণ হওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা।

- Advertisement -islamibank

এর আগে ২০২১ সালের ১ এপ্রিল হোয়াইট গোল্ড বা সাদা সোনা নামে পরিচিত ভেনামি চিংড়ি চাষ খুলনার পাইকগাছায় পরীক্ষামূলক চাষ শুরু হয়।

ব্যবসায়ী ও রফতানিকারকরা বেশ কয়েক বছর ধরে বেশি লাভজনক ভেনামি জাতের চিংড়ি চাষ করার দাবি জানিয়ে আসছিল।

এ প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বেসরকারি সংস্থা সুশীলন এবং এমইউসি ফুডসকে ভেনামির পরীক্ষামূলক চাষের অনুমতি দেয় সরকার। তবে নানা সংকটে দীর্ঘদিন ধরে তারা চাষাবাদ শুরু করতে পারছিল না।

পরীক্ষামূলকভাবে চাষের জন্য থাইল্যান্ড থেকে ১ মিলিয়ন ভেনামি চিংড়ি আমদানি করে খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় নেওয়া হয়। সেখান থেকে চিংড়ি পোনা পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাগেরহাট চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের পরীক্ষাগারে নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার পর পাইকগাছার লবণ পানি গবেষণা কেন্দ্রের পুকুরে ছাড়া হয়।

দেশে প্রথমবারের মতো খুলনার পাইকগাছায় পরীক্ষামূলক ভেনামি চিংড়ি চাষ করে সফল হন যশোরের এক চাষি। ২০২২ সালের ৩১ মার্চ এমইউসি ফুডস থাইল্যান্ড থেকে ১০ লাখ ভেনামি জাতের পোনা আমদানি করে। ৪টি পুকুরে ভেনামি চিংড়ি চাষ শুরু করেন। পোনা ছাড়ার ৮০তম দিনেই এক একেকটি চিংড়ি গড়ে ৩০ থেকে ৩২ গ্রাম ওজন হয়েছে। যা এখনই বিক্রয় যোগ্য। যেখানে গলদা বা বাগদা বিক্রয় যোগ্য হতে সময় নেয় কমপক্ষে ১২০ দিন।

চাষিরা বলেন, ভেনামি চিংড়ি রোগ সহনীয় এবং বৃদ্ধিও সন্তোষজনক। এতে খরচও কম। বাগদা চিংড়ি চাষে যদি ১০০ টাকা খরচ হয়, তাহলে ভেনামি চিংড়ি চাষে মাত্র ৫০ টাকা খরচ হবে।

এদিকে, বিশ্বের ৬২টি দেশে ভেনামি চিংড়ি বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে এশিয়ার দেশে রয়েছে ১৫টি। বিশ্বে চিংড়ি বাণিজ্যের ৭৭ শতাংশ দখল করে আছে ভেনামি চিংড়ি। বাগদা চিংড়ির তুলনায় দাম কম হওয়ায় বিশ্ববাজারে এর চাহিদা বেশি। এশিয়ার চিংড়ি রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশে এতোদিন বাণিজ্যিকভাবে ভেনামি চিংড়ি চাষ নিষিদ্ধ ছিল।

বাংলাদেশের বাগদার চেয়ে ২০ গুণ বেশি উৎপাদন ক্ষমতার উচ্চ ফলনশীল ভেনামি চিংড়ির পরীক্ষামূলক চাষ করে সফল হয়েছেন চাষিরা। অর্ধেক কম খরচে বেশি উৎপাদন হয়েছে এ জাতের চিংড়ির। এ অবস্থায় ভেনামি চাষে বিপুল সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে বলে মনে করছেন সংশিষ্টরা।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM