ঈদের মার্কেট ধরতে আজ থেকে চৌকি বসিয়ে অস্থায়ীভাবে ব্যবসা শুরু করেছেন রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।
এর আগে সেখানে বালি ফেলে ও ইট বিছিয়ে বিক্রির উপযোগী ব্যবস্থা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
বুধবার বেলা সোয়া ১টার দিকে চৌকি বসিয়ে অস্থায়ীভাবে বেচাবিক্রির উদ্বোধন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
খোলা আকাশের নিচে রোদ উপেক্ষা করে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে দোকান বসিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মূলত ঈদকে সামনে রেখে তড়িঘড়ি করে ব্যবসায়ীদের বসার জায়গা করে দেওয়া হয়েছে।
ডিএসসিসির তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর সংখ্যা ৩ হাজার ৮৪৫ জন। তবে আজ প্রায় ৭০০ জন ব্যবসায়ী চৌকি বসিয়ে বঙ্গবাজারে বসেছেন। যদিও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা অনুযায়ী সবাই অস্থায়ীভাবে চৌকি বসিয়ে এখানে ব্যবসা করতে পারবেন।
অন্যদিকে বঙ্গবাজারের ১.৭৯ একর জায়গাজুড়ে প্রায় ২.৫ লাখ ইট বিছানো হয়েছে এবং প্রায় ১৫০ গাড়ি বালি ফেলছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এর আগে অগ্নিকাণ্ডস্থলে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। অগ্নিকাণ্ডস্থল থেকে ১০৬০ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।
আরা যারা চৌকিতে বসেছেন, তাদের কেউ প্যান্ট, কেউবা শার্ট, পাঞ্জাবি, শিশুদের পোশাক কেউবা শাড়ি বিক্রি করছেন। তীব্র গরমের কারণে অসুবিধা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এই ব্যবসায়ীরা।
বঙ্গবাজারে এমন এক চৌকি নিয়ে ব্যবসা করতে বসেছেন আব্দুস সোবহান নামের একজন ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, আজ থেকে আমরা এখানে অস্থায়ীভাবে ব্যবসা করার জন্য বসার সুযোগ পেয়েছি। যারা যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তারা অর্থাৎ আমরা ঈদ সামনে রেখে কিছুটা ব্যবসার আশা দেখছি। তবে আমাদের মধ্যে বেশিরভাগরাই পাইকারি ব্যবসায়ী। তাই এই চৌকিতে এভাবে খোলা আকাশের নিচে এভাবে আমাদের ব্যবসা হবে না।
চৌকি বসিয়ে অস্থায়ীভাবে ব্যবসা শুরু করা এখানকার আরেক ব্যবসী মনিরুল ইসলাম বলেন, খোলা আকাশের নিচে এমন রোদে আমরা বিক্রি করার আশায় না হয় বসলাম।কিন্তু এই রোদে, তীব্র তাপে কাস্টমার তো আমাদের দোকানে আসবে না। তাই ব্যবসাটা হওয়া কঠিন এখানে। তবুও যেহেতু সামনে ঈদ তাই আমরা বুক ভরা আশা নিয়ে বসেছি এখানে। যা শেষ হওয়ার তার সব শেষ হয়ে গেছে আমাদের এই আগুনে।
এদিকে বঙ্গবাজারে চৌকি বসিয়ে ব্যবসা কার্যক্রমের উদ্বোধনে এসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, যারা এখানে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের তালিকা এবং দোকানের লোকেশন অনুযায়ী আমরা এখানে সবাইকে বসার সুযোগ করে দিয়েছি। যেহেতু আজকেই শুরু করা হবে এমন ঘোষণা আমারা দিয়েছিলাম তাই আমরা আজই শুরু করেছি। যেহেতু সামনে ঈদ তাই ব্যবসায়ীদের কাছে এই সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায়ীদের কথা বিবেচনা করে আমরা আমরা চৌকি বসিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করার এই ব্যবস্থা আমরা করেছি। এটা যেহেতু খোলা আকাশের নিচে তাই ব্যবসায়ীদের সমস্যা হচ্ছে। আমারা পরবর্তীতে এখানে ছাউনি লাগিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।
প্রসঙ্গত, গত ৪ এপ্রিল ভোরে আগুন লাগে দেশের অন্যতম প্রধান কাপড়ের মার্কেট বঙ্গবাজারে। এর প্রায় ৬ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে, তবে তার আগেই পুড়ে যায় সব দোকান। আগুনের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে আশপাশের মার্কেটগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
জেএন/এমআর