পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে বরণ করতে পাহাড়ে শুরু হয়েছে তিনদিন বৈসাবি উৎসব। বুধবার উৎসবের প্রথম দিনে উদযাপিত হচ্ছে ফুল বিজু। বৃহস্পতিবার মূল বিজু এবং শুক্রবার আয়োজন হবে গজ্জ্যাপজ্জ্যার।
বাংলা বর্ষপঞ্জিকা অনুসারে বছরের শেষ দুই দিন ও বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন চাকমারা ফুল বিজু, মূল বিজু ও গজ্জ্যাপজ্জ্যা বিজু পালন করে থাকে।
বাংলা নববর্ষের প্রথমদিন চাকমারা বলে গজ্জ্যাপজ্জ্যা দিন, এদিনও মুল বিজুর আমেজ থাকে, মুরব্বি ও বয়স্কদের নিজ বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে উন্নত খাবার পরিবেশন করে আশীর্বাদ নেওয়া হয়।
বিহারে ভিক্ষু সংঘকে উন্নত মানের খাদ্য ভোজন দান করা হয়, বাড়িতে বিকেলে পারিবারিক মঙ্গলের জন্য ধর্মীয় গুরুদের আমন্ত্রণ করে মঙ্গল সূত্রপাঠ শোনা হয়। তরুণ-তরুণীরা বয়স্কদেরকে গোসল করিয়ে আশীর্বাদ নেন।
বুধবার (১২ এপ্রিল) সকালে খাগড়াছড়িতে নদীর তীরে ফুল দেয়ার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় বৈসাবি উৎসবের। ভোরে দল বেঁধে ফুল তুলে আনেন নানা বয়সের মানুষ। পরে সূর্যদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নদীতে ফুল ভাসিয়ে পরিবারসহ সবার মঙ্গল চেয়ে প্রার্থনা করা হয়।
বৃহস্পতিবার মূল বিজুতে ঘরে ঘরে চলবে অথিতি আপ্যায়ন। এদিন তৈরি করা হয় ঐতিহ্যবাহী পাচন। শুক্রবার থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত হবে মারমা ও রাখাইনদের ঐতিহ্যবাহী জলকেলি।
রাঙ্গামাটিতেও কাপ্তাই হ্রদে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে ফুল ভাসিয়ে শুরু হয়েছে তিনদিনের বৈসাবি আয়োজন। পরে সবার মঙ্গল চেয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা হয়।
এপ্রিল মাসে তিন পার্বত্য জেলায় মারমাদের সাংগ্রাইং, চাকমাদের বিজু, ত্রিপুরাদের বৈসু, তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু, ম্রোদের চাংক্রান পোয়ে, খুমী সম্প্রদায়ের সাংক্রাই, খেয়াং সম্প্রদায়ের সাংলান, চাক সম্প্রদায়ের সাংগ্রাইং খুমী সম্প্রদায়ের সাংক্রাই উৎসব পালন করে থাকেন।
এলাকাবাসীরা বলছেন, উৎসবকে ঘিরে সব সম্প্রদায়ের কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটেছে। করোনার কারণে গেলো দুইবছর উৎসব হয়নি। এবার আয়োজন হওয়ায় রাঙ্গামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলায় বইছে আনন্দ উচ্ছ্বাস।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাংগ্রাইং-বিজু-বিষু-বৈসু উৎসব ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে পাহাড়ে সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার আছে।
বান্দরবানে সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উৎসব স্থলে পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে দুই স্তর বিশিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। সকলেই নিরাপদে নির্বিঘ্নে উৎসব উদযাপন করতে পারবেন
জেএন/পিআর