চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেছেন, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের অন্যতম মৌলিক চাহিদা। বিভিন্ন কারণে সমাজের অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত কিডনি রোগীরা অর্থের অভাবে চিকিৎসা-সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এসব রোগীদের রক্তদান, ক্যাথেটার পরবর্তী ফিস্টুলার মাধ্যমে সপ্তাহে ২ থেকে ৪ বার ডায়ালাইসিস করা ও অন্যান্য ওষুধ সামগ্রী ক্রয় অত্যন্ত ব্যয় বহুল হওয়ার কারণে অনেকে অকালে প্রাণ হারাচ্ছে। তারা যতদিন বাঁচবে ততদিন এভাবেই চলবে। মানব কল্যাণ হচ্ছে সর্বোচ্চ এবাদত। সমাজের ধর্ণাঢ্য ব্যক্তি ও মানবিক প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে আসলে অসহায় কিডনি রোগীদের জীবন বাঁচবে।
আজ ১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে সিভিল সার্জনের সম্মেলন কক্ষে ‘কিডনি রোগী কল্যাণ সংস্থা’ আয়োজিত রোগীদের চিকিৎসা সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ‘কিডনি রোগী কল্যাণ সংস্থা’র পক্ষে মোট ৩৬ জন কিডনি রোগীর প্রত্যেকের হাতে ৫ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন সিভিল সার্জন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এসময় সংগঠনের পক্ষ থেকে মানবতার বাতিঘর, চট্টগ্রামের অহংকার ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়।
কিডনি রোগী কল্যাণ সংস্থা’র মানবিক সহায়তাকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, কিডনি রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের কিডনি বিভাগ ও স্যানডোরে অনেকে ডায়ালাইসিসের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সেখানে শয্যা ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকট রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সাথে বিশেষায়িত ক্যান্সার, বার্ণ ও কিডনি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু করেছেন। এসব হাসপাতাল বাস্তবায়ন হলে গরীব ও অসহায় রোগীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার অনেকাংশে কমে আসবে। তিনি অসহায় কিডনি রোগীদের কল্যাণে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
সিভিল সার্জন আরও বলেন, বর্তমান সরকারের আন্তরিকতায় দেশে যক্ষা রোগীরা বিনামূল্যে চিকিৎসা-সেবা পাচ্ছে। ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসায় সমাজকল্যাণ বিভাগ ও অংশীজনেরা এগিয়ে আসছে। সুবিধাবঞ্চিত কিডনি রোগীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার আরও কিভাবে সহজ করা যায় সে বিষয়ে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় আলোকপাত করে এ ব্যাপারে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ও চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে অবহিত করা হবে।
কিডনি রোগী কল্যাণ সংস্থা’র প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এস.এম জাহেদুল হকের সভাপতিত্বে এবং অর্থ সম্পাদক আখতারুজ্জামান কায়সারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. দেবব্রত কুমার চক্রবর্তী, সিইউজে’র সদস্য ও জাতীয় সংবাদ সংস্থা-এনএনবি’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান সাংবাদিক রনজিত কুমার শীল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কিডনি রোগী কল্যাণ সংস্থা’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাব্বির আহমদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া। কিডনি রোগীদের মধ্যে অনুভূতি প্রকাশ করেন প্রফুল্ল কুমার নাথ, আলী আশরাফ ও শামসুন্নাহার।
অনুষ্ঠানে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বস্তরের কর্মচারী, কিডনি রোগী কল্যাণ সংস্থা’র কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জেএন/এমআর