চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলী খেলায় খেলার ১১৪ তম আসরে কক্সবাজার জেলার চকরিয়ার তারিকুল ইসলাম জীবন বলীকে হারিয়ে এবার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ও শিরোপা লড়াইয়ে বিজয়ী হয়েছেন গতবারের রানাসআপ কুমিল্লার শাহজালাল বলী।
আজ মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে নগরীর লালদীঘি মাঠে ২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২০ ফুট প্রস্থের বালুর মঞ্চে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে এবারের বলি খেলা শুরু হয় ।
বিকেল ৫টা ২৩ মিনিটে ফাইনালের শুরু থেকে দর্শকরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে শাহজালাল ও জীবন বলীর পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। মাত্র ৬০ সেকেন্ডের মাথায় ফলাফল চলে আসে। জীবন বলেকে ধরাশায়ী করে শেষ মুহূর্তে বিজয়ী হয় শাহজালাল বলী।
শাহজালাল বলী গেল ১১৩ তম আসরের রানাসআপ হয়েছিলেন। তাছাড়া গত ২০১৮ ও ২০১৯ সালে টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হন শাহজালাল। অন্যদিকে গেল আসরের চ্যাম্পিয়ান জীবন বলী এর আগে ১০৯তম আসরেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন।
এদিন বিকাল ৩ টায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীর পৃষ্ঠপোষকতায় লালদীঘির চত্বরে ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলার ১১৪ তম আসরের আয়োজন করা হয়।
এতে ৬০ জন বলী অংশ নেন। ১১৪ তম আসরে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন খাগড়াছড়ির সৃজন চাকমা বলী এবং চতুর্থ স্থান অর্জন করেন আনোয়ারার আব্দুর নুর বলী। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন চট্টগ্রামের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
বলীখেলায় চ্যাম্পিয়নকে ট্রফির পাশাপাশি প্রাইজ মানি পেয়েছেন ৩০ হাজার টাকা। এ ছাড়া দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান অধিকারীরা ট্রফির সঙ্গে পেয়েছেন যথাক্রমে ২০ হাজার, ১০ হাজার ও ৬ হাজার টাকা।
বলীখেলায় সেমিফাইনালে পর্যায়ের আগে মোট ৩০ রাউন্ড খেলা হয়। প্রাথমিক রাউন্ডে জয়লাভকারী প্রত্যেকে দেড় হাজার টাকা পেয়েছেন। বলী-খেলাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে ৩ দিনের বৈশাখী মেলা।
উল্লেখ্য, ১৯০৯ সালে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে লড়তে দেশের তরুণ যুবকদের শারীরিকভাবে তৈরি করতে এই বলী খেলার প্রচলন করেছিলেন চট্টগ্রামের বদরপাতি এলাকার বাসিন্দা আবদুল জব্বার।
ধারাবাহিকভাবে শত বছর পেরিয়ে বর্তমানে দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ ঐতিহ্যবাহী লোকজ উৎসবেই শুধু পরিণত হয়নি এই খেলা, ঠাঁই করে নিয়েছে ইতিহাসেও।
জেএন/পিআর