ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ঘরের মাঠে আর্সেনালকে বড় ব্যবধানে হারালো ম্যানসিটি। বুধবার (২৬ এপ্রিল) ঘরের মাঠে আর্সেনালের বিপক্ষে ৪-১ গোল ব্যবধানে জিতেছে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।
আর এই ম্যাচে আর্সেনালকে পেয়েই যেন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন কেভিন ডি ব্রুইনা ও হাল্যান্ড। জোড়া গোল করে দলের জয়ের নায়ক কেভিন ডি ব্রুইনা। এ ছাড়া জন স্টোন্স ও আর্লিং হালান্ড একটি করে গোল করেছেন।
ম্যাচ হেরেও ৩৩ ম্যাচে ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই থাকলো আর্সেনাল। আর আর্সেনাল থেকে দুই ম্যাচ কম খেলে দুই পয়েন্ট (৭৩) পিছনে রয়েছে ম্যানসিটি।
বুধবার ইতিহাদ স্টেডিয়ামে কেভিন ডি ব্রুইনা দুটি গোল করলেন, বানিয়ে দিলেন আরেকটি। ডি ব্রুইনাকে দুটি গোলই বানিয়ে দেন হাল্যান্ড, আর শেষ মুহূর্তে নিজেও করেন রেকর্ড গোল।
তাতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ মৌসুমের শেষভাগের ‘বিগ ম্যাচে’ মিকেল আর্তেতার দলকে ৪-১ গোলে হারিয়ে শিরোপার পথে বড় ধাপ ফেললো ম্যানচেস্টার সিটি।
ডি ব্রুইনা ও জন স্টোনস বিরতির আগে ম্যানসিটিকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেন। আর্লিং হাল্যান্ড তার মার্কার রব হোল্ডিংয়ের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছেন। প্রথম ৪৫ মিনিটে তার নামের পাশে একটি গোল থাকা উচিত ছিল। লক্ষ্যে তিনটি শট রেখেছিলেন তিনি।
কিন্তু আর্সেনাল কিপার অ্যারন রামসডেল বাধা হয়ে দাঁড়ান। ৭ মিনিটে হোল্ডিংয়ের চাপ সামলে লম্বা ক্রস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফাঁকা জায়গায় বল বাড়ান হাল্যান্ড। বল খুঁজে নিয়ে ডি ব্রুইনা এক দৌড়ে বক্সে ঢুকেই নিচু কোনাকুনি শটে জাল কাঁপান বেলজিয়ান তারকা।
২৬ মিনিটে ডি ব্রুইনা আরেকবার আর্সেনালের বক্সে আক্রমণ করেন। বেশ কাছ থেকে নেওয়া তার শট স্লাইড করে প্রতিহত করেন হোয়াইট।
দুই মিনিট পর রামসডেল দারুণ সেভে ব্যবধান বাড়তে দেননি। বক্সের ডানপ্রান্তে হোল্ডিং ও জিনচেঙ্কোকে কাটিয়ে বাঁপায়ে শট নেন হাল্যান্ড। বলের মুভমেন্ট বুঝতে পেরে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ফেরত পাঠান আর্সেনাল কিপার।
আবারও হাল্যান্ডকে হতাশ করেন রামসডেল। বাইলাইন থেকে ইকে গুন্ডোগান ড্রিবলিংয়ে থোমাস পার্টিকে কাটিয়ে বক্সের মাঝে বল ফেরত পাঠান। হাল্যান্ড বল পেয়েই শট নেন। কিন্তু আর্সেনাল গোলকিপার ব্লক করে বল বিপদমুক্ত করেন।
বিরতির আগে যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ডি ব্রুইনার ফ্রি কিক থেকে স্টোনস হেড করে জাল কাঁপান। লাইন্সম্যান অফসাইডের পতাকা ওঠালে উদযাপন করতে পারেনি সিটিজেনরা। অবশ্য ভিএআরে দেখা যায় অনসাইডে ছিলেন স্টোনস, ব্যবধান দ্বিগুণ করার উচ্ছ্বাস নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা।
ম্যাচের ঘড়ি এক ঘণ্টা ছোঁয়ার আগেই তৃতীয় গোলে ম্যানসিটির জয় সুনিশ্চিত হয়ে যায়। ৫৪ মিনিটে পার্টির ভুল পাসে বল পান হাল্যান্ড। নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার বল নিয়ে খানিকটা এগিয়ে ডি ব্রুইনার দিকে বাড়ান।
হোল্ডিংয়ের পায়ের ফাঁক দিয়ে ৩-০ করেন বেলজিয়ান তারকা। এনিয়ে আর্সেনালের বিপক্ষে ৮ গোল করলেন ডি ব্রুইনা। ৮০তম মিনিটে তাকে উঠিয়ে জুলিয়ান আলভারেজকে নামান পেপ গার্দিওলা।
৮৬ মিনিটে আর্সেনাল সান্ত্বনাসূচক গোল করে। ট্রসার্ডের অ্যাসিস্টে হোল্ডিং বক্সের মধ্যে থেকে ডানপায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন। রেফারি যখন শেষ বাঁশি বাজানোর অপেক্ষায়, তখন ম্যানসিটি আবার গোলের উদযাপনে মেতে ওঠে।
প্রথমার্ধের হতাশা কাটিয়ে হাল্যান্ড জাল কাঁপান। তাতে মোহাম্মদ সালাহর রেকর্ড ভাঙেন। ৩৮ ম্যাচের লিগ মৌসুমে রেকর্ড ৩৩তম গোল করলেন ২২ বছর বয়সী নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার।
হেড ব্যান্ড খুলে চুল ছেড়ে দিয়ে ম্যাচ শেষ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন হাল্যান্ড। হুট করে গোলের সুযোগ পেয়ে যান, এবার আর রামসডেল তাকে থামানোর কোনও সুযোগই পাননি। স্টোনসের হেডে ফিল ফডেন বল পান।
বক্সের প্রান্ত থেকে তিনি হাল্যান্ডের দিকে বল বাড়ান। তার পাস হোল্ডিংয়ের গায়ে লেগে নরওয়েজিয়ান তারকার কাছে পৌঁছায় এবং নিচু শটে গোলকিপারকে পরাস্ত করে মৌসুমের ৪৯তম গোল করেন তিনি।
জেএন/পিআর