আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে বাংলাদেশ ঋণ নিয়েছে ‘ব্রিদিং স্পেস’ হিসেবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) স্থানীয় সময় বিকেলে ওয়াশিংটনের হোটেল রিজ কার্টলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন আইএমএফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। এ সময় শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
আইএমএফ প্রধানের সঙ্গে আলাপে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের এই উন্নয়ন রাতারাতি হয়নি, এটা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ফসল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যখন জেলে ছিলেন তখন বাংলাদেশকে কিভাবে উন্নত করবেন সেই পরিকল্পনাগুলো করেছেন এবং ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলা এবং নারীর ক্ষমতায়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
আব্দুল মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমরা আপনাদের যে লোনটা নিয়েছি আইএমএফএর একটা ‘ব্রিদিং স্পেস’ হিসেবে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লোন অনুমোদন করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, আইএমএফ এমডি প্রধানমন্ত্রীর অভূতপূর্ব প্রশংসা করেছেন। পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশ রোল মডেল (সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে)। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি এই কোভিডের পরেও বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রেখেছে।
মন্ত্রী বলেন, তিনি (আইএমএফ এমডি) প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের খুবই প্রশংসা করেছে। বলেছেন সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে এই ধরনের ভিশন, এই ধরনের লিডারশিপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আব্দুল মোমেন জানান, ক্রিস্টিলিনা জর্জিয়েভা বলেছেন, ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ভালো কানেকটিভিটি এবং আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাপণার কারণে বাংলারদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি, বিশেষ করে এই করোনার মধ্যেও স্থিতিশীলতা ধরে রাখার প্রশংসা করেন আইএমএফ প্রধান।
ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, গত ১৪ বছরে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে আইএমএফ সব সময় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে; বাংলাদেশ কখনো এটি (পরামর্শ) থেকে বিচ্যুত হয়নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে আইএমএফ এর সঙ্গে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশ মাত্র ২ সপ্তাহের আলোচনায় এটি পেয়েছে, যেখানে বহু দেশ বছরের পর পর আলোচনা করেও এই লোন পায় না।
আইএমএফ প্রধানকে উদ্বৃত করে আব্দুর রউফ বলেন, আইএমএফ ভবিষ্যতেও এই ধরনের সহযোগিতা অব্যহত রাখবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় আইএমএফ এর ভূমিকার প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আশা প্রকাশ করেছেন ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা অব্যহত থাকবে।
ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান।
গত জানুয়ারিতে পাওয়া আইএমএফ লোন অনুযায়ী, বাংলাদেশ পরবর্তী ৪২ মাসে ৭ কিস্তিতে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার পাবে। এ লোনের গড় সুদ ২ দশমিক ২ শতাংশ।
জেএন/পিআর