বিএমডিপোর ভয়াবহ বিস্ফোরণে কারও দায় পায়নি পুলিশ

চট্টগ্রামের ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে ৫১ জনের প্রাণহানির ঘটনায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ।

- Advertisement -

জেলা গোয়েন্দা পুলিশ বুধবার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।

- Advertisement -google news follower

এ রিপোর্টে বিএম কন্টেইনার ডিপোর কোনও ‘দায় পায়নি’ বলে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়,এটা ‘মিসেটক অব ফ্যাক্ট’।

অথচ তখন মালিকপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলো ঘটনার দায় এড়াতে পারে না বলেছিল অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি।

- Advertisement -islamibank

পুলিশের দেওয়া এই চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ করবে কি না, সে বিষয়ে আগামী সোমবার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ শুক্রবার গণমাধ্যমকে বলেন, “আমাদের তদন্তে আমরা দেখেছি এটা ‘মিসেটক অব ফ্যাক্ট’। ঘটনা যেটা ঘটেছে সেটার সাথে যারা আসামি, তারা কেউ সংশ্লিষ্ট না। এটা একটা নিছক বিস্ফোরণ। বাকিটা আদালতের বিষয়।

আদালত যদি সেটিসফাইয়েড না হয়, তাহলে নারাজি দিতে পারবে, অন্য কোনো সংস্থাকে পুনঃতদন্ত করতে দিতে পারে।

গতবছর ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লাগার পর একের পর এক বিস্ফোরণে তা ছড়িয়ে পড়ে। ডিপোতে থাকা রাসায়নিকের কারণে ছড়িয়ে পড়া ওই আগুন ৮৬ ঘণ্টা পর বিভিন্ন বাহিনীর চেষ্টায় নেভানো হয়।

ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫১ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন দুই শতাধিক।অগ্নিকাণ্ডের এক মাস পরও সেখান থেকে পোড়া হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়।

বিস্ফোরণের তিন দিন পর ৭ জুন রাতে সীতাকুণ্ড থানার দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক) ধারায় একটি মামলা করেন এসআই আশরাফ সিদ্দিকী।

ডিপোর ডিজিএম (অপারেশন) নুরুল আকতার, ম্যানেজার (অ্যাডমিন) খালেদুর রহমান, সহকারী অ্যাডমিন অফিসার আব্বাস উল্লাহ, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মো. নাসির উদ্দিন, সহকারী ব্যবস্থাপক (ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো) আবদুল আজিজ, কন্টেইনার ফ্রেইট স্টেশনের ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম, একই বিভাগের নজরুল ইসলাম ও জিএম (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) নাজমুল আকতার খানকে সেখানে আসামি করা হয়।

সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ প্রথমে মামলাটি তদন্ত করলেও পরে তদন্তভার পায় চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

এর মধ্যে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি গতবছর ৬ জুলাই প্রতিবেদন দেয়। সেখানে বলা হয়, বেসরকারি ওই কনটেইনারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মালিকপক্ষ এবং তদারকির দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলো দায় এড়াতে পারে না।

অগ্নিকাণ্ডের পর বিভিন্ন সংস্থার পরিদর্শনে ওই ডিপোতে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড থাকার বিষয়টি উঠে আসে। বিএম ডিপোর মূল প্রতিষ্ঠান স্মার্ট গ্রুপের সহযোগী আল রাজী কেমিকেল কমপ্লেক্স থেকে এসব রাসায়নিক বিদেশে রপ্তানির জন্য সেখানে রাখা ছিল।

প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই হাইড্রোজেন পার অক্সাইডই ডিপোতে ‘আগুনের উৎস’।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পুলিশ সুপার শফিউল্লাহ বলেন, “যাদের আসামি করা হয়েছে তারা আলাদা আলাদা সেক্টরে কাজ করেন। আসামিদের মধ্যে অনেকেই হতাহত হয়েছেন। যাদের আসামি করা হয়েছে তারাও আগুন নেভানোর চেষ্ঠা করেছেন।

তদন্তে আমাদের কাজটা ছিল কোনো ‘ক্রিমিনাল অফেন্স’ হয়েছে কিনা, কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে কিনা কিংবা কোন ‘ইল মোটিভ’ ছিল কিনা সেটা দেখা।

“এখানে দেখা গেছে এটা ‘মিসটেক অব ফ্যাক্ট’। যাদের আসামি করা হয়েছে তারা কেউ ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট না। এটা নিছক একটা বিস্ফোরণ।

যেখানে বিস্ফোরক রাখা হয়েছে, সেখানে টেকনিক্যাল ফল্ট থাকতে পারে। এগুলো দেখার আলাদা সংস্থা আছে, তারা প্রতিবেদন দেবে।

জেএন/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM