তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ড. ওয়াজেদ মিয়া ছিলেন নির্লোভ, নিরহংকার ও প্রচারবিমুখ। তিনি দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
প্রয়াত পরমাণু বিজ্ঞানী এবং প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার (৯ মে) বিকালে রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ড. ওয়াজেদ মিয়া প্রধানমন্ত্রীর স্বামী পরিচয় কখনো ব্যবহার করতেন না। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের কন্যার জামাতা সেই পরিচয়ও দিতেন না। নিরহংকার এই মানুষটির আচরণে এই পরিচয়গুলো কখনো বোঝার উপায় ছিলো না।
তিনি বলেন, অত্যন্ত মেধাবী ড. ওয়ায়জেদ মিয়া পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি পরমাণু শক্তি কমিশনকে নতুনভাবে ঢেলে সাজিয়ে এর উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রেখেছিলেন।
আজকে যে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে, এটির প্রয়োজনীয়তা অনুধাবনের ক্ষেত্রেও তার ভূমিকা ছিলো। অর্থাৎ এই কনসেপ্টটি ধারণ করার ক্ষেত্রে এবং এটি করলে পরে দেশের জন্য কি ভালো হবে, সেটি তুলে ধরার ক্ষেত্রেও তার ভূমিকা ছিলো।
ড. হাছান বলেন, ‘২০০৭ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়, তখন ড. ওয়াজেদ মিয়ার সাথে প্রচন্ড দুর্ব্যবহার করা হয়েছিলো এবং তারপর থেকে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তার অসুস্থতাও বেড়ে যায়।
পরবর্তীতে তিনি ২০০৯ সালে ৯ মে ইন্তেকাল করেন। তার এই মৃত্যু দিবসে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ড. ওয়াজেদ মিয়া অনেক বইও লিখেছেন। তার কর্ম, প্রজ্ঞা এবং দেশের প্রতি অবদানের কারণে যুগ যুগ ধরে তিনি দেশের মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।
সাংবাদিকরা এ সময় বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব বলেছেন যে আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদকের কথা তিনি বিশ্বাস করেন না। আর জনগণ মনে করে, মির্জা ফখরুল সাহেব সবসময় মিথ্যা কথা বলেন -এটিই হচ্ছে বাস্তবতা।
মির্জা ফখরুল সাহেবের এটা গুণ না দোষ, যেটিই হোক- সাধারণ মানুষ এটিকে দোষই বলবে। তিনি অবলীলায় সুন্দরভাবে মিথ্যা কথা বলতে পারেন, যা দুঃখজনক হলেও সত্য।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক যে কথাটি বলেছেন, আগামী নির্বাচনে আমরা বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ চাই এবং সেই ক্ষেত্রে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়েও তিনি কথা বলেছেন। আমাদের সদিচ্ছার কথাই আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক তার বক্তব্যে বলেছেন। যারা নির্বাচনই চায় না, যারা নির্বাচনকে ভয় পায়, তাদের কাছে আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য এতো শ্রুতিমধুর হবে না, এটি খুবই স্বাভাবিক।
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য ‘সরকার নির্বাচনে আসতে বিএনপিকে প্রলোভন দেখাচ্ছে’- এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যেখুন বিএনপিকে প্রলোভন দেখানোর কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা চাই বিএনপিসহ সমস্ত রাজনৈতিক দল আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও জনগণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন অংশগ্রহণ করবে।
বিএনপি দলগতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও, বিএনপির নেতারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এটি মির্জা ফখরুল ও রিজভী সাহেবরা দেখতে পারবেন।
জেএন/পিআর