চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আব্দুল মালেক (৬৮) নামে এক পাচারকারীকে আটক করেছে র্যাব। এসময় তার কাছ থেকে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকা মূল্যের ১৪ কেজি বন্যহাতির দাঁত ও হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়।
গতকাল শুক্রবার (২৬ মে) রাত সাড়ে ১০টায় নগরীর শুলকবহরের একটি বাড়ি থেকে পাচারের জন্য মজুদ করা মূল্যবান এসব জিনিসসহ তাকে আটক করা হয়।
আটক আব্দুল মালেক মৌলভীবাজার এলাকার কমলগঞ্জ থানার দীতেশ্বর এলাকার মৃত হাজী আব্দুল আলীর ছেলে বলে জানা গেছে।
র্যাব জানায়, তাদের কাছে গোপন সোর্সের মাধ্যমে খবর আসে শুলকবহর এলাকার একটি বাড়ির তৃতীয় তলায় হাতির দাঁত ও হরিণের চামড়া বিকিকিনি করছে।
এমন খবর শুক্রবার রাতে অভিযান চালায় র্যাব। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর সময় আব্দুল মালেক নামে এক পাচারকারীকে আটক করা হয়।
এ সময় ওই রুমের খাটের নিচ থেকে একটি সাদা প্লাস্টিকের বস্তা থেকে চারটি হাতির দাঁত, ছোট বড় ও মাঝারি আকারের ২০টি হাতির দাঁতের খন্ডাংশ (মোট ১৪ কেজি) এবং একটি হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক পাচারকারী জানায়, দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পারমিট ব্যতীত বন্যপ্রাণী (হাতির দাঁত ও হরিণের চামড়া) বিভিন্ন অংশ বিশেষ সংগ্রহ করে পরবর্তীতে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে উচ্চমূল্যে বিক্রি করে আসছে।
আজ শনিবার (২৭ মে) দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার। তিনি বলেন, আটক মালেক ১৯৭৬ সাল থেকে তার বাবার সাথে রাঙ্গামাটি জেলার বাগাইছড়ি এলাকায় হাতি দেখভাল করার জন্য আসেন।
তার বাবার কয়েকটি হাতি ছিল। ১৯৯৮ সালে তার বাবা মারা গেলে হাতির ব্যবসা দেখভাল করার জন্য তিনি ছয় বছর ধরে রাঙ্গামাটি জেলার বাগাইছড়ি থানার মরিশ্যা এলাকায় অবস্থান করেন। তিনি একজন লাইসেন্সধারী হাতির পালক।
২০১০ সালের পরে লাইসেন্স প্রভিশন হলে তিনি পুনরায় লাইসেন্স করেন। তবে তিনি স্থায়ীভাবে তখন বাঘাইছড়ি থাকতেন না, ২/৪ দিন থেকে আবার মৌলভীবাজার চলে যেতেন। তার বৈধভাবে মোট ছোট বড় ১২ টি হাতি আছে।
তবে স্থানীয় তথ্যানুযায়ী তার আরো ২৪/২৫টি রেজিষ্ট্রেশনবিহীন হাতি রয়েছে যা দিয়ে তিনি বিয়ে বাড়িতে ভাড়াসহ পাহাড়ি এলাকায় গাছ টানার কাজ করেন।
পাহাড়ি এলাকা হতে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিভিন্ন বন্যপ্রানীর চামড়া, হাতির দাত সংগ্রহ করে অবৈধভাবে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিজের হেফাজতে সংরক্ষণ করে আসছিলেন।
গোপন তথ্য পেয়ে শুক্রবার রাতে নগরীর শুলকবহর এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উদ্ধারকৃত মালামালসহ সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
জেএন/পিআর