গেল কয়েকদিন ধরে চট্টগ্রাম নগরে তাপমাত্রা অব্যাহতভাবে বেড়েই চলেছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিং।
ফলে অফিসগামী, মানুষ, শ্রমিক, স্কুলগামী শিক্ষার্থী এবং অল্প বয়সের শিশুরা গরম ও তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এছাড়া নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন নগরের মানুষ।
রোবাবার (৪ জুন) নগরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে এ চিত্র চোখে পরে। এদিকে দুপুরে সূর্যের তাপ বৃদ্ধির কারণে জরুরি কাজ না থাকলে ঘর থেকে বের হচ্ছে না অনেকে।
শনিবার (৩ জুন) দুপুরের দিকে চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ বলেন, চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকার কারণে প্রচুর ঘাম হচ্ছে এবং গরমের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে।
লোডশেডিংয়ে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখছে অনেকে। প্রতিম গুপ্তা নামের এক যুবক লিখেন, গতকাল থেকে প্রিডেইড মিটারে বিকাশ থেকে রিচার্জ করতে পারছি না লোডশেডিংয়ের জন্য। নাজিম ইসলাম লিখেন, কয়েকমাস আগেও গণমাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের গল্প শুনেছি। সংসদেও দেখেছি বিদ্যুৎ নিয়ে নানান মনগড়া বক্তব্য। কিন্তু কাজের বেলায় শূন্য।
হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উৎস ধর বলেন, স্কুলে গেলে বিদ্যুৎ থাকে না, বাসায় এলেও বিদ্যুৎ পাই না। সন্ধ্যায় পড়তে বসলেও বিদ্যুৎ অনেকটা ভোগায়। সেই সঙ্গে তীব্র গরমে পড়ালেখা করা অনেক কষ্টের।
পলি আক্তার নামের এক নারী তার সাত মাস বয়সী বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার সময় বলেন, বাচ্চাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি কিন্তু গরমের কারণে মনে হয় বাচ্চা আরো অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। গরম সহ্য না করতে পেরে বাচ্চা খুবই কান্নাকাটি করছে।
ঘুরে দেখা গেছে অতিরিক্ত গরমের কারণে রিকশাচালকরা রিকশা চালানো বাদ দিয়ে রাস্তার পাশের ছায়ায় আশ্রয় নিয়ে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলছে ।
তেমনি একজন রিকশা চালক মোক্তার আলি বলেন, রোডোত(রাস্তা) চরম গরম, তাই রিসকা (রিকসা) চালান বাদ দিয়া গাছের নিচোত বসি দম লরজি।
তিনি আরো বলেন, যখন এসকা চালাই তখন ভালই থাকি, কারণ তখন গাওত বাতাস নাগে। কিন্তু যখন ভাড়া মারা শেষ হয় তখন কলজা ফাটি যায়।
জানা যায়, চট্টগ্রামে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিন গড়ে ১১০০-১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়। সেখানে পাওয়া যায় ৮০০ থেকে ৮৫০ মেগাওয়াট।
জেএন/হিমেল/পিআর