ভেন্টিলেটরসহ দশটি নতুন আইসিইউ বেড পেয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল। এর সাথে গাইনী ওয়ার্ডের জন্য দুটি লেবার টেবিলও রয়েছে। প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকার এসব চিকিৎসা সরঞ্জাম গত মঙ্গলবার হাসপাতালে পৌঁছেছে। চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বর্তমানে এসব সরঞ্জাম হাসপাতালের স্টোরে রাখা হয়েছে বলেও জানান হাসপাতাল পরিচালক।
প্রসঙ্গত, সচরাচর নতুন যে কোন চিকিৎসা সরঞ্জাম বরাদ্দ পেলে তা ঢাকার সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোর ডিপো (সিএমএসডি) থেকে হাসপাতালগুলোতে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ ঢাকার সিএমএসডি থেকেই চিকিৎসা সরঞ্জাম বুঝে নিয়ে হাসপাতালে আনতে হয়। তবে সিএমএসডি’র পরিবর্তে এবার এসব চিকিৎসা সরঞ্জাম আনা হয়েছে সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এক দফায় ৩০টিরও বেশি ভেন্টিলেটর ও আইসিইউ বেড বরাদ্দ পায়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এসব আইসিইউ বেড–ভেন্টিলেটর বরাদ্দ পেতে সিলেটের স্থানীয় এমপি–মন্ত্রী ভূমিকা রাখেন বলে জানা যায়। ওই হাসপাতালে আগে থেকেই কিছু সংখ্যক আইসিইউ বেডের সেবা চলমান ছিল। তবে এক দফায় বেশি সংখ্যক আইসিইউ বেড–ভেন্টিলেটর পেলেও এর সব কয়টি সংস্থান (স্থাপন) করতে পারেনি সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। স্থাপন করতে না পারায় ২০টি করে ভেন্টিলেটর ও আইসিইউ বেড হাসপাতালে অব্যবহৃত অবস্থায় ছিল। সম্প্রতি এক সভায় বিষয়টি জানাজানি হলে ওই ২০টি আইসিইউ বেড–ভেন্টিলেটর বরাদ্দ পেতে জোর চেষ্টা চালায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে খবর পেয়ে এর অন্তত অর্ধেক সংখ্যক (দশটি করে) আইসিইউ বেড–ভেন্টিলেটর চট্টগ্রামের জন্য দাবি করেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান। সিএমএসডির কাছে এ দাবি জানান তিনি। এই দাবির প্রেক্ষিতে শেষ মুহূর্তে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে দশটি করে এবং চমেক হাসপাতালকে দশটি করে আইসিইউ বেড–ভেন্টিলেটর বরাদ্দ দেয় সিএমএসডি। পরে সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকেই বরাদ্দ পাওয়া এসব চিকিৎসা সরঞ্জাম সরাসরি চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।
চমেক হাসপাতালের স্টোর শাখার তথ্য অনুযায়ী– বরাদ্দ পাওয়া ভেন্টিলেটর গুলো জার্মানিতে তৈরি। দশটি ভেন্টিলেটরের দাম এক কোটি ৪০ লাখ টাকা (প্রায়)। আর আইসিইউ বেডগুলো চীনের তৈরি। দশটি আইসিইউ বেডের দাম প্রায় ২৪ লাখ টাকা। এছাড়া গাইনী ওয়ার্ডে অপারেশন থিয়েটারের জন্য পাওয়া গেছে দুটি লেবার টেবিল। সবমিলিয়ে প্রাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জামের দাম প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকা।
স্থাপন হতে যাওয়া নতুন আইসোলেশন ওয়ার্ডে আইসিইউ সেবা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালের মূল (পুরনো) ভবনের নিচ তলায় এই আইসোলেশন ওয়ার্ড স্থাপনের কাজ চলছে। ভেন্টিলেটর ও আনুসঙ্গিক সব সুবিধাসহ সেখানেই এসব আইসিইউ বেড স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান।
জেএন/এমআর