আন্দোলন স্থগিত রাখার পাশাপাশি আগামীকাল থেকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে ফিরবেন বলে ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রামে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সাথে মত বিনিময় সভায় শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় ৯ দাবির পাশাপাশি আরও কয়েকটি জানান তারা। এসময় নগরীর ৩৯টি স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি অংশ গ্রহণ করেন।
রোববার (৫ আগস্ট) বিকেল ৪টায় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনের সভাপতিত্বে এ মত বিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত হয়।
এতে আন্দালনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে দাবি উত্থাপন করে চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজের ছাত্র মিনহাজ উদ্দিন রিফাত।
কেন্দ্রীয় দাবির পাশাপাশি চট্টগ্রাম অঞ্চলের দাবিগুলো হলো-বেপরোয়াভাবে গাড়িতে কোন জনসাধারণের মৃত্যু হলে গাড়ি চালকের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি বিধান রাখতে হবে। এই বিষয়ে আইন পাস করতে হবে, চট্টগ্রাম নগরীর অধিকাংশ স্কুল-কলেজের সামনে ফুট ওভারব্রিজ নেই। স্কুল-কলেজের সামনে ফুট ওভারব্রিজ অথবা আন্ডার পাস নির্মাণ করতে হবে, স্কুল কলেজের সামনে জেব্রা ক্রসিং দিয়ে স্পিড ব্রেকার করে দিতে হবে এবং যাত্রী ছাউনি তৈরি করতে হবে, সড়ক দূর্ঘটনায় আহতের চিকিৎসা খরচ এবং নিহতের পরিবারের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে, স্কুল কলেজ ছুটির সময় বাসকে ইশারা করলে দাড়াতে হবে। এতে সহযোগিতা করার জন্য ট্রাফিক পুলিশ সহায়তা করবে, শিক্ষার্থীদের পরিবহনের ক্ষেত্রে ভাড়া অর্ধেক নিতে হবে, মেট্রো এলাকায় ভোর ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কোন ট্রাক নগরীতে প্রবেশ করতে পারবে না, নগরীতে সরকারি স্কুল কলেজের জন্য ২০টি বাস সার্ভিস দিতে হবে। তার সাথে বিআরটিসি বাসগুলো সচল করে দিতে হবে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যে। সেখানে ভাড়া নিতে হবে অর্ধেক , স্কুল কলেজের সামনে ট্রাফিক সার্জেন্টের ব্যবস্থা করতে হবে এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যব্স্থা নিতে হবে, প্রত্যেক স্কুল- কলেজে একটি স্বেচ্ছাসেবী দল গঠন করতে হবে।
এসব দাবিগুলোর জন্য একটি যৌক্তিক সময় দিয়ে কার্যকর করার নিশ্চয়তা প্রদান করলে ছাত্ররা আর আন্দোলনে যাবে না বলে রিফাত জানান।
এদিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, সবগুলো দাবি কার্যকর করতে একটু সময়তো লাগবে। যেসব সমস্যাগুলো চট্টগ্রাম থেকেই সমাধান করা যাবে তা অতিদ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। সেক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশকে চিঠি পাঠানো হবে। বাকি যেসব দাবি রয়েছে তা শিক্ষার্থীরা স্মারক লিপি আকারে আমাকে দিলে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট পাঠানোর ব্যবস্থা করবো।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, আজকে থেকে ট্রাফিক সপ্তাহ চলছে এখানে এক একটা টিমের সাথে দশজন করে রোভার স্কাউট দেয়া হয়েছে। ট্রাফিক সপ্তাহের সাথে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টও চলবে। তোমরা (ছাত্ররা) জানো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হলেন জাতির পিতার সন্তান। তাই তিনি যেটি বাস্তবায়ন করবেন বলেন তিনি দ্রুত বাস্তবায়ন করে ফেলেন। আর তোমরা যদি তা উনার বরাবরে দাও তাহলে সেটি অবশ্যই বাস্তবায়ন করবেন।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর সড়কে নামে শিক্ষার্থীরা। এরপর বৃহস্পতিবার সরকার আন্দোলনকারীদের দাবি মানার ঘোষণা দিয়ে তাদের ঘরে ফেরার আহ্বান জানানোর পর চট্টগ্রামসহ দেশজুড়ে অঘোষিত ধর্মঘট শুরু করে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। গতকাল রাতে ঘোষণা দিয়ে পরিবহন না চালানোর কথা জানায় তারা। এতে অচল হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামসহ সারাদেশ