ভোরের শিশির ভেজা ঘাস আর কুয়াশা ঢাকা পথে উত্তরের হাওয়া জানান দিচ্ছে এসেছে শীত। প্রকৃতিতে শীতের আগমনে যোগ হয়েছে শীতের কাপড় কেনার ধুম। শীতের হাত থেকে বাঁচতে ধনী-গরিব সব শ্রেণির মানুষের প্রয়োজন গরম পোশাক। আর এ সময় ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে শুরু করে বড় বড় শপিং সেন্টার-সবখানেই এসেছে শীতের পোশাক। নিত্যনতুন ডিজাইনের শাল, সোয়েটার, কোট, কোটি, টুপি, মাফলার শোভা পাচ্ছে পোশাকের দোকানে। আর ক্রেতা তার সাধ্যমত শীতবস্ত্র কিনে নিচ্ছে।
অনেকের কাছে শীত আবার ফ্যাশনের মৌসুম! বাহারি সব শাল-সোয়েটার-কোট-কোটি তাদের এই সময়ের সঙ্গী। নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে চলছে ইন্টারন্যাশনাল উইমেন্স এসএমই এক্সপো বাংলাদেশ। মেলা ঘুরে দেখা গেল শীতের কাপড়ই বেশি। এর মধ্যে রয়েছে ফ্যাশনেবল শাল, কোট, মোদি কোট।
নওশিন জামদানি নামে মেলার ১১৭ নং স্টলে পাওয়া যাচ্ছে মণিপুরি শাল। এর বিশেষত্ব হচ্ছে এটি উলের তৈরি, যা শরীরকে গরম রাখে। এই স্টলটি এসেছে সোনারগাঁওয়ের নারায়ণগঞ্জ থেকে।
স্টলের কর্মী নীলা জয়নিউজকে বলেন, মণিপুরি শাল ওড়নার মতো ব্যবহার করা যায়। ছেলে-মেয়ে সবাই এটি ব্যবহার করতে পারে। এই শাল পুরোটাই হাতের তৈরি। একটি মণিপুরি শালের দাম সর্বনিম্ন ৩৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা পর্যন্ত।
১০৮ নম্বর স্টলে শীতবস্ত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছে ফরেন জোন। এটি এসেছে পাকিস্তানের করাচির সাদ্দার মাকের্ট থেকে। এ স্টলের বিক্রেতা ওয়াসিম আহমেদ জানান, আমাদের দোকানে কাশ্মীরি শাল আছে। এটি সম্পূর্ণ হাতে তৈরি এবং উলের। এর জমিনে আছে হাতের সুন্দর কাজ। একটি কাশ্মীরি শালের দাম দুই হাজার ৬০০ টাকা থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত।
তিনি জানান, এখনো কাশ্মীরি শালের তেমন একটা বিক্রি হচ্ছে না। আশা করি, সামনে ভালো বিক্রয় হবে।
মেলার ১২২ নম্বরে রয়েছে রিহাত টেক্সটাইল নামে একটি স্টল, যেটি এসেছে রাঙামাটি থেকে। এখানকার সেলসম্যান আশা চাকমা জয়নিউজকে জানান, আমাদের স্টলে হাতের তৈরি চাদর আছে। নেট চাদর, মণিপুরি চাদর, ভেলবেট চাদর, বোমচাদর। একেকটা বোম চাদরের দাম ৫০০ থেকে ৭৫০ টাকা, ভেলবেট চাদরের দাম ৬০০ টাকা, নেট চাদরের দাম ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত।
মেলায় ঘুরতে আসা জুবায়দুল নাহার জানালেন, কাশ্মীরি শালের অনেক দাম। সবার পক্ষে কেনা সম্ভব না। সেক্ষেত্রে আমাদের দেশের শাল দামের দিক থেকে ক্রেতার সাধ্যের মধ্যে থাকে। এসব শালে শীত থেকেও বাঁচা যায়, আবার এগুলো ফ্যাশনেবলও।
চায়না থেকে যে শাল এসেছে সেটি যদিও ক্রেতার ক্রয় সাধ্যের মধ্যে, কিন্তু মান তেমন ভালো না বলে জানালেন তিনি।
শাল ছাড়াও মেলায় দেখা গেছে বিভিন্ন ডিজাইনের কোট। ৭৪ নম্বর স্টলে রয়েছে ছেলেদের কোটের সম্ভার। এখানে আছে বাজরাঙ্গি ভাইজান, প্রিন্স কোট, ডিনার কলার, বেস কলার, ইন্ডিয়ান মোদি।
স্টলের কর্মী মনু ইসলাম জানান, আমাদের এখানে দেশি এবং ইন্ডিয়ান কোট আছে। বাজরাঙ্গি ভাইজান কোটের দামটা একটু বেশি হলেও, বাকিগুলোর দাম বেশি না। সব শ্রেণির মানুষের কথা মাথায় রেখেই আমরা স্টল সাজিয়েছি।