‘হাসিনা: এ ডটার’স টেল’-এক ঘণ্টার এই তথ্যচিত্রটি নগরের ষোলশহরের ফিনলে ভবনের সিনেপ্লেক্সে দর্শক সারিতে বসে শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১১টা থেকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে উপভোগ করলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৪৯ সালে পাকিস্তানি শাসকদের হাতে গ্রেফতার হওয়া থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, জাতির কলঙ্ক মীর জাফর খন্দকার মুশতাক, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালোরাত, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পূর্বাপর ঘটনা, বিদেশে বেদনাবিধুর নির্বাসনের দিনগুলো, ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ইত্যাদি ঘটনার স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা যখন নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন, তখন উপস্থিত দর্শকদের চোখ টলমল করছিল। চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি স্বয়ং জননেতা এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীও।
পুরো সিনেপ্লেক্সে তখন পিনপতন নীরবতা। শেখ হাসিনা বলছিলেন, ১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট রাতে ক্যান্ডেল নাইট ডিনারের আয়োজন করেন বেলজিয়ামে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত সানাউল হক। ১৫ আগস্ট ভোরে জার্মানির রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ফোনে জানতে পারেন তাদের পিতা বাঙালি জাতির সূর্য সন্তান শেখ মুজিবকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
কী নিষ্ঠুর সানাউল হক !! আগের দিন তিনি ক্যান্ডেল নাইট ডিনার দিলেন, সকালে ঘুম চোখে দুই সন্তান তাদের পরমারাধ্য পিতা-মাতাসহ নিকটজনদের মৃত্যুর ঘটনা শুনে হতবিহ্বল, দিশেহারা। ওই অবস্থায় সানাউল হক হুমায়ুন রশীদকে বলেন, বোঝা দুটিকে নিয়ে যান !!!
হুমায়ুন রশীদ যখন শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও হাসিনার অবুঝ দুই সন্তানকে জার্মানিতে আনার ব্যবস্থা করতে একটি গাড়ি চেয়েছিলেন। প্রতিউত্তরে সানাউল হক বলেন, তার গাড়ি খারাপ !!
জনমদুঃখী টুঙ্গীপাড়ার সবার আদরের ‘খোকা’র পরিবারের এই গল্প বাঙালি জাতির এক জীবন্ত ইতিহাস, যা ইতিহাসে অম্লান হয়ে থাকবে চিরকাল। জয়তু জাতির পিতা মুজিব, জয়তু জননেত্রী শেখ হাসিনা।
লেখক: সহ-সভাপতি চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন