আওয়ামী লীগ সমসময় ইসলামের খেদমত ও উন্নয়নে কাজ করে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (১৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা-২০২৩ এর বিজয়ী হাফেজদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ইসলামের প্রসারে আওয়ামী লীগ সবসময় কাজ করে। ইসলামের বাণী ছড়িয়ে দিতে সারাদেশে মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে বায়তুল মোকাররমের উন্নয়ন প্রকল্প ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে মসজিদ নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেয়।
কওমি মাদরাসার উন্নয়নের সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, কওমি মাদরাসা দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল। স্বীকৃত দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
অনুষ্ঠানে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যার ঘটনা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, কারবালার ঘটনার আরেকটি পুনরাবৃত্তি ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে ঘটেছিল। কারবালায় নারী-শিশুদের হত্যা করা হয়নি। কিন্তু ১৫ আগস্ট ঘাতকরা আমার মা, আমার ভাইয়ের স্ত্রীদের ছাড়েনি। চার বছরের শিশুকেও ছাড়েনি। সবাইকে হত্যা করা হয়। সেই রাতে আমি ও আমার ছোট বোন দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যাই।
‘৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর সেই চেনা মুখগুলো পাইনি। যারা আমাকে এয়ারপোর্টে পৌঁছে দিয়েছিল। আমি পেয়েছিলাম বনানীতে সারি সারি কবর। পেয়েছি বাংলাদেশের মানুষ। কাজেই সে মানুষগুলো আমার পরিবার, তারাই আমার আপনজন। তাদের মাঝেই ফিরে পেয়েছি আমার বাবার ভালোবাসা, মায়ের স্নেহ।-বলেন সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা, আস্থা, বিশ্বাস পেয়েছি, যা আমাকে প্রেরণা যুগিয়েছে, শক্তি যুগিয়েছে, সাহস যুগিয়েছে। বারবার মৃত্যুকে সামনে থেকে দেখেছি। কিন্তু আমি কোনোদিন ভয় পাইনি। কেন যেন মনে হতো আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, এ দেশের মানুষের জন্য কিছু করার জন্য। আল্লাহ প্রত্যেক মানুষকে কিছু সময় দেন, কিছু মানুষকে কিছু কাজ দেন, এই কাজটা আমি যতক্ষণ না পর্যন্ত শেষ করব, রাব্বুল আলামিন আমাকে রক্ষা করবেন। এ বিশ্বাস নিয়ে আমার পথ চলা।
জঙ্গিবাদ নির্মূলে আলেমদের সহযোগিতা চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস নির্মূল করার ক্ষেত্রে আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই। আমরা যার যার ধর্ম সে সে পালন করব। যেটা আমাদের নবী করিম (সা.)-এর শিক্ষা। আমরা সেই শিক্ষা নিয়েই চলব। বিচার তো আল্লাহ করবেন। কাজেই কে ভালো মুসলমান, কে খারাপ মুসলমান, কে হিন্দু, কে খ্রিস্টান এগুলো আমাদের দেখার বিষয় না। যার যার কর্মফল সে সে ভোগ করবে।
‘আপনাদের সকলের কাছে আমার অনুরোধ আমাদের ধর্মের মানইজ্জতটা রক্ষা করবেন। কেউ যেন বিপথে না যায়। একেবারে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত যারাই কাজ করছেন, কার ছেলে-মেয়ে কোথায় কার সঙ্গে মেশে, কোথায় যায় এগুলো দেখতে হবে। এই যে ইসলামের নামে বদনাম, সেটা ঘোচাতে হবে। সামান্য মুষ্টিমেয় কয়েকজনের জন্য পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ শান্তির ধর্ম ইসলাম, তার সঙ্গে কেন সন্ত্রাসী নাম যুক্ত হবে? -বলেন প্রধানমন্ত্রী।
জেএন/এমআর