হিলি স্থল বন্দরে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের বিক্রি কমে যাওয়ায় গোডাউনে পঁচতে শুরু করেছে।
ভারতীয় পেঁয়াজের বিক্রি কমে যাওয়ায় আমদানিকারকদের মাথায় দুশ্চিন্তার ছাপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পুঁজি ফেরাতে আমদানিকারকেরা অর্ধেক দামে পেয়াজ বিক্রি করছে।
এর কারণ হিসাবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আমদানিকারকেরা বলছেন, ভারতের এক তরফা সিদ্ধান্তের কারণে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ভারতের ৪০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করেই পেঁয়াজের বাজারের এই অবস্থা।
তাদের মতে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের খেয়াল খুশির কারণে দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা শঙ্কিত হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণে দেশিয় পেঁয়াজ বাজারে চলে আসায় আমদানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রিতে ধস নেমে আসে।
ফলে অতিরিক্ত শুল্কে আমদানি করা পেঁয়াজ অর্ধেক দামে বিক্রি করেও পুঁজি উঠাতে পারছে না আমদানিকারকেরা।
দিনাজপুর শহরের বাহাদুর বাজার এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আড়তদার জানান, পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকারের পেয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়ার সাথে সাথে আমদানিকারকরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে পেয়াজ আমদানীতে। তার মতে আমদানীকারকেরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে না। নিয়ন্ত্রণ করে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ। তার মতে ওই খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের একটি অংশ আমদানীকারকের ভূমিকায় রয়েছে।
এরবাদে রয়েছে আরো আমদানীকারক। যারা মূলত বন্দরেই কেনা বেঁচার সাথে জড়িত। ভারতীয় পেয়াজ আমদানীর পর পরই বাজারে প্রচুর পরিমানে দেশিয় পেয়াজ উঠতে থাকে। এসব পেয়াজ আসলো কোথা থেকে? তার মতে সরকারিভাবে যদি সঠিক তদারকি করা হয় তাহলে পেয়াজ কেন অনেক পণ্যের দাম অতিরিক্ত হারে বাড়ার কোন সুযোগ থাকবে না।
এদিকে আমদানীকারকদের হুমড়ি খাওয়া অবস্থা দেখে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বাড়িয়ে দেয় শুল্ক। গত ১৮ আগস্ট হঠাৎ করেই পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ৪০ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়ে দেয়ায় ভারতীয় পেয়াজের দাম বেড়ে যায়।
তবে মারাত্মক বন্যায় ভারতে কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে দেশিয় স্বার্থ রক্ষায় ভারতীয় সরকার আগাম সতর্কতা হিসাবে নিত্যপণ্যের রফতানিতে অনুৎসাহিত করার লক্ষেও শুল্ক বাড়িয়ে দিয়েছে।
আমদানী খরচ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের চট্টগ্রাম খাতুনগঞ্জসহ ঢাকার বড় বড় ব্যবসায়ীদের গোডাউনে থাকা হাজার হাজার টন পেয়াজ বিক্রি করে নিজেদের রক্ষা করবে নাকি আমদানীকারকদের বাঁচাবে বড় (বাজার নিয়ন্ত্রণকারী) ব্যবসায়ীরা। আর এ কারণেই দেশিয় বড় ব্যবসায়ীরা বিমুখ হয়ে পড়ে ভারতীয় পেয়াজের দিক থেকে। পঁচতে শুরু করে স্থল বন্দরের গোডাউনে থাকা ভারতীয় পেয়াজ।
হিলি বন্দর থেকে পাওয়া তথ্য সুত্র মতে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে হিলি বন্দরে ভারতীয় পেয়াজের বিক্রি প্রতিদিন গড়ে ৫ লক্ষ টাকা কমে গেছে।
সুত্রটির মতে, হিলি বন্দরে শনিবার পেয়াজ বিক্রি হয়েছে কেজি হিসাবে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে। বিক্রি কমে যাওয়ায় গোডাউনে পেয়াজ স্তুপ হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য যে, গত ৬ কর্মদিবসে দিনাজপুরের হিলি বন্দর দিয়ে ১৮৫ ট্রাকে ৫ হাজার ৫১০ মেট্রিক টন বিভিন্ন জাতের ভারতীয় পেয়াজ বাংলাদেশে ঢুকেছে। সূত্র ইনকিলাব