চলতি বছরের আগস্ট মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪০৩টি। এর মধ্যে নিহত ৩৭৮ জন এবং আহত হয়েছেন ৭৯৪ জন।
তবে জুলাই মাসের তুলনায় আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে ২১ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং প্রাণহানি কমেছে ৩৪ দশমিক ০৩ শতাংশ। গত জুলাই মাসে ৫১১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৭৩ জন নিহত হন।
শনিবার (৯ সেপ্ম্বের) দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য তুলে ধরেছে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
বিজ্ঞপ্তিতে সড়ক দুর্ঘটনার ১০টি কারণও তুলে ধরা হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে।
কারণগুলো হলো- ১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; ২. বেপরোয়া গতি; ৩. চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; ৪. বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; ৬. তরুণ-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; ৭. জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; ৮. দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; ৯. বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি; ১০. গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।
আগস্টে নিহত ৩৭৮ জনের মধ্যে নারী ৪৪ ও শিশু ৫১ রয়েছে।
৪০৩টি সড়ক দুর্ঘটনার মধ্যে ১৪২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৪৬ জন, যা মোট নিহতের ৩৮ দশমিক ৬২ শতাংশ। পথচারী নিহত হয়েছে ৯৩ জন, যা মোট নিহতের ২৪ দশমিক ৬০ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৭ জন, অর্থাৎ ১৫ দশমিক ০৭ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নয়টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমলেও তা টেকসই উন্নতির সূচক নির্দেশ করছে না। কারণ সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনায় তেমন কোনো উন্নতি ঘটেনি।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন আরও জানায়, এ সময়ে ১১টি নৌ দুর্ঘটনায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন নয়জন এবং নিখোঁজ রয়েছেন ছয়জন। রেলপথে ২৮টি দুর্ঘটনায় ৩৭ জনের মৃত্যু ও ১৯ জন আহত হয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১৬৯টি দুর্ঘটনা জাতীয় মহাসড়কে, ১৪৮টি আঞ্চলিক সড়কে, ৪৫টি গ্রামীণ সড়কে, ৩৭টি শহরের সড়কে এবং চারটি দুর্ঘটনা অন্যান্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে।
ঢাকা বিভাগে ৩৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ; রাজশাহী বিভাগে ১১ দশমিক ১৬ শতাংশ দুর্ঘটনা প্রাণহানি ১০ দশমিক ৫৮ শতাংশ; চট্টগ্রামে ১৩ দশমিক ১৫ শতাংশ দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ১৫ দশমিক ০৭ শতাংশ; খুলনায় ১৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ১৪ দশমিক ৮১ শতাংশ; বরিশালে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ৬ দশমিক ৬১ শতাংশ; সিলেটে ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ৪ দশমিক ২৩ শতাংশ; রংপুরে ৯ দশমিক ১৮ শতাংশ দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ১০ দশমিক ৩১ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ দুর্ঘটনায় ৫ দশমিক ০২ শতাংশ প্রাণহানি হয়েছে।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এ বিভাগে ১৪৩টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১২৬ জন। সবচেয়ে কম ১৯টি দুর্ঘটনা ঘটেছে সিলেট বিভাগে। এখানে ১৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। একক জেলা হিসেবে গাজীপুরে সবচেয়ে বেশি ৩১টি দুর্ঘটনায় ২৯ জন নিহত হয়েছেন বলে জানানো হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
জেএন/এমআর