দেশে প্রথমবারের মতো তিন কৃষিপণ্য ডিম-আলু ও পেঁয়াজের একসাথে দাম বেঁধে দিয়েছে সরকার। তাছাড়াও অন্যতম ভোগ্যপণ্য ভোজ্যতেলের দামও সরকার নির্ধারিত।
তবে এক সপ্তাহ পার হলেও বাজারে সরকারের নির্ধারিত দামে মিলছে না এ চার পণ্য। এমনকি আলু-পেঁয়াজের বাজারে অভিযান চালিয়ে দেড়শ’ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ও দুই ধাপে ১০ কোটি ডিম আমদানির অনুমতিও বাজারে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই নতুন করে দাম বেড়েছে আদা ও মুরগির, যথারীতি চড়া দাম অব্যাহত আছে সবজি বাজারেও।
সরকারের নির্ধারিত দামে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হওয়ার কথা ৬৫ টাকা, আলু ৩৬ টাকা এবং ডিমের হালি ৪৮ অর্থাৎ প্রতি পিস ১২ টাকা দরে।
তবে শুক্রবার বিকেলে এবং শনিবার সকালে চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে মানভেদে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা, আলু ৪৫ টাকা ও ডিমের ডজন ১৪৫ টাকা।
সপ্তাহের ব্যবধানে আলু ও ডিমের ডজনে ৫ টাকা কমলেও কার্যকর হয়নি নির্ধারিত দাম। অন্যদিকে আগের দামেই বিক্রি হয়েছে দেশি পেঁয়াজ ও অপরিবর্তিত দরে অর্থাৎ প্রতি কেজি ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে ভারতীয় পেঁয়াজ।
এদিকে বাজারে নতুন করে বেড়েছে আদা ও মুরগির দাম। প্রায় ৮০ থেকে ১শ’ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয়েছে ২৮০ টাকার উপরে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দেশি আদার সরবরাহ হঠাৎ কমে যাওয়ায় বাজারে দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। তবে বাজারে নতুন মিয়ানমারের আদার সরবরাহ বেড়েছে, কিন্তু আমদানি ব্যয় বৃদ্ধিতে দামও বেশি।
অন্যদিকে প্রায় ২ মাস ধরে স্থিতিশীল থাকা মুরগির বাজার এ সপ্তাহে ফের বেড়েছে। বিশেষ করে সোনালি মুরগি দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। প্রায় ৪০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৪০ টাকার উপরে। একইভাবে প্রায় ২০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে ২১০ টাকার উপরে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন ৩ দিনের বাচ্চার দাম বৃদ্ধিতে খামারিরা মুরগির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। জানা গেছে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে ৩ দিনের বাচ্চার দাম।
এছাড়াও সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন কাঁচা বাজারে চড়া দাম অব্যাহত আছে মাছ ও সবজির দামও। যদিও এ সপ্তাহে দু-একটি সবজির দাম কিছুটা কমে তা স্বাভাবিকের তুলনায় এখনও বাড়তি।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১শ’ টাকার উপরে বিক্রি হয়েছে বেগুনি গোল বেগুন, বরবটি ১২০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা, সিম ১৫০ টাকা, কচুরলতি, উস্তা, সবুজ গোল বেগুন, দুনদুল প্রতিকেজি ৮০ টাকা, পটল, লম্বা বেগুন, ঢেড়শ, ঝিঙ্গা, কাকরোল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, লাউ ও চাল কুমড়ার পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৫০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩০ টাকা এবং দেশি কাঁচা মরিচ ২শ’ ও আমদানি মরিচ ২২০ টাকা দরে।
এছাড়াও আগের চড়া দামেই অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ বাজার। এদিন মাঝারি আকারের রুইয়ের কেজি বিক্রি হয়েছে ৪৫০ টাকা, বড় কাতল ৫শ’ টাকা, পাঙ্গাশ ২শ’ থেকে ২২০ টাকা, চাষের কই ৩৭০ টাকা, তেলাপিয়া ৩শ’ টাকা ও শিং মাছ ৫৫০ টাকা থেকে ৬শ’ টাকা দরে।
যথারীতি ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৬শ’ থেকে ১৮শ’ টাকা, ৪শ’ থেকে ৫শ’ গ্রামের ইলিশের কেজি বিক্রি হয়েছে ৮শ’ টাকা দরে। এর বাইরে শোল মাছ ৮শ’ টাকা, পাবদা ৬শ’ থেকে ৬৫০ টাকা, ট্যাংরা মাছের কেজি আকার ভেদে ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা, মলা মাছ ৬শ’ টাকা, বাইলা ১ হাজার টাকা, পোয়া মাছ ৪শ’ থেকে ৬শ’ টাকা, মাঝারি আকারের বোয়াল ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা, গুঁড়া মাছ ৪শ’ টাকা, ছোট চিংড়ি ৫শ’ টাকা, গলদা ৭শ’ এবং বাগদা ৮শ’ থেকে ৯শ’ টাকা দরে।
জেএন/পিআর