চট্টগ্রাম নগরে সড়কের পাশে পড়ে থাকা লাগেজের ভেতর থেকে উদ্ধার হওয়া শরীরের ৮ টুকরাগুলো মো. হাসান (৬২) নামের এক ব্যক্তির। নিহত হাসান বাঁশখালীর কাথারিয়ার সাহেব মিয়ার ছেলে।
প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বলছে, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে স্ত্রী ও ছেলে মিলে তাকে খুন করার পর কেটে টুকরা টুকরা করেন। পরে টুকরাগুলো লাগেজ ও বস্তায় ভরে ফেলে দেন।
শনিবার সকালে ইপিজেড থানার আকমল আলী খালপাড় থেকে লাশের বাকি অংশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলী সড়কের পকেট গেইট এলাকার জমির ভিলার ৭ নম্বর বাসায় তাকে খুন করা হয়।
নিহত হাসানের এনআইডি কার্ড অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১৩ মার্চ ১৯৬১। হাসান দুই ছেলে এবং এক মেয়ের পিতা। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার অস্থায়ী ঠিকানা, সিলেট সদরের সাধুর বাজার সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনির জামাল মিয়ার গ্যারেজ।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার একেএম মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, মূলত নিহত হাসান ২৭-২৮ বছর নিখোঁজ ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তার পরিবারের সাথে কোনো রকমের যোগাযোগ ছিলো না। সম্প্রতি তিনি পরিবারের কাছে ফিরে আসলেই বাধে বিপত্তি। চট্টগ্রামের বাঁশখালীর পৈত্রিক সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে দুই ছেলে ও স্ত্রী। কিন্তু হাসান লিখে দিতে সম্মতি না দেওয়ায় তার স্ত্রী, দুই ছেলে এবং ছোট ছেলের স্ত্রী মিলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে তাকে।
তিনি বলেন, ‘খুনের পর ঠাণ্ডা মাথায় লাশ কেটে টুকরো করে ট্রলিব্যাগে করে আট টুকরো ফেলা হয় পতেঙ্গা ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় খালে। মাথা এবং বুকসহ শরীরের আরও কিছু অংশ বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলা হয়। ছোট ছেলেই তার বাবার শরীরের টুকরোগুলো বিভিন্নস্থানে ফেলেন।’
এদিকে এ ঘটনায় নিহত মো. হাসানের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম এবং তার বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করেছে পিবিআই। তারা ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এর আগে ২১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পতেঙ্গা বোট ক্লাবের অদূরে ১২ নম্বর গেইটে একটি ট্রলিব্যাগ পাওয়া যায়। কফি রঙের ট্রলিব্যাগে ছিল মাথা ও শরীরবিহীন খণ্ডিত ৮ অংশ। তবে সেসময় নিহতের পরিচয় নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদির বাদী হয়ে এক বা একাধিক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জেএন/পূজন/এমআর
