দূরপাল্লার ট্রাক চালকরা যাত্রাবিরতিহীনভাবে গাড়ি চালানোর কারণে ঘটছে দূর্ঘটনা। চালকদের জন্য বিশ্রামাগার না থাকায় তারা দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে জীবন ও সম্পদহানী হচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় চট্টগ্রামে একটি ট্রাক টার্মিনাল ও ৫০ শয্যা বিশিষ্ট রেস্ট হাউস করার পরিকল্পনা রয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুলের উদ্বোধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এ পরিকল্পনার কথা জানান।
ব্র্যাক এর ডিরেক্টর প্রশাসন (নিরাপদ সড়ক) ও সাবেক ডিএমপি কমিশনার নাজমুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক দক্ষিণ) এন এম নাসিরুদ্দিন, বিআরটিএ চট্টগ্রাম মেট্রোর উপ-পরিচালক তৌহিদুল হোসেন। বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট তানভীর আল নাসীফ, চট্টগ্রাম জেলার ব্র্যাক সমন্বয়ক মো. ইনামুল হাসান। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ব্র্যাক এর রোড় সেফটি প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ও সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি এম খালিদ মাহমুদ।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, আপনি গাড়ি চালাচ্ছেন ঠিক, কিন্তু আপনি কাউকে তো মেরে ফেলতে পারবেন না। আমি ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার পূর্বে ১০ ঘণ্টা ট্রেনিং দেয়ার বিষয়ে কেবিনেট ডিভিশনে চিঠি দিবো। জেলা প্রশাসক সম্মেলনে চালকদের জন্য ৫০ শয্যা বিশিষ্ট রেস্ট হাউস ও চট্টগ্রামে ট্রাক টার্মিনালের বিষয়ে কথা বলবো। ইতোমধ্যে নারীদের জন্য বিআরটিসি বাস দেয়ার বিষয়ে কথা বলেছি।
বিআরটিএ চট্টগ্রাম মেট্রোর উপ-পরিচালক তৌহিদুল হোসেন বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্যক্রম এখন অনেক আপডেট করা হয়েছে। লার্নার লাইসেন্সের জন্য এখন বিআরটিএ যেতে হয় না। ঘরে বসে বিসিএসের মত ফরম পূরণ করে কাজ করে ফেলতে পারবেন। রুট পারমিট, ট্যাক্স টোকেন, রেজিস্ট্রেশনসহ গ্রাহক পর্যায়ে পৌছানোর চেষ্টা চলমান রয়েছে। আমরা দেখছি, মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন বেশি হচ্ছে এবং দুর্ঘটনাও ঘটছে। ব্র্যাকের ড্রাইভিং স্কুলকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আমরা আশা করবো টেকসই ড্রাইভিং স্কুল হিসেবে যাতে প্রতিষ্ঠিত হয়।
সিএমপির ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার এন এম নাসিরুদ্দিন বলেন, রোডে প্রতিবছর জ.হীবনহানি হচ্ছে সেটাকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। চালকের অদক্ষতা, অসুস্থ প্রতিযোগিতা, গাড়ির ফিটনেসে সমস্যাসহ নানা কারণে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ৫৬টি গণ পরিবহন রুটে স্টার্টিং এন্ডিং পয়েন্টে কোন পার্কিং ব্যবস্থা রাখা হয়নি। প্রচুর পরিমাণে গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। ৪০ লক্ষাধিক মোটরসাইকেল চালক রয়েছেন, তাদের কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। যার কারণে অহরহ দূর্ঘটনা ঘটছে।
ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সর্বশেষ চট্টগ্রামসহ সারা দেশে তাদের পরিচালিত ৭টি স্কুল রয়েছে। ব্র্যাক দেশের ১২ লাখ মানুষকে সড়ক দূর্ঘটনা রোধে সচেতন করেছে। ২০১২ সালে শুরু হওয়া এ ড্রাইভিং স্কুলটি শিঘ্রিই আন্তর্জাতিক আইএসও সার্টিফিকেট পেতে যাচ্ছে।
জেএন/এফও/এমআর