সনাতন সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন শুভ মহালয়া আজ শনিবার। এ দিন থেকেই শুরু দেবীপক্ষের।
শ্রী শ্রী চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আবহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। আর এই ‘চণ্ডী’-তেই আছে দেবী দুর্গার সৃষ্টির বর্ণনা। শারদীয় দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো মহালয়া।
এ উপলক্ষে চট্টগ্রামের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
দেবীপক্ষের সূচনালগ্নে শনিবার ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তি কামনায় তিল-তর্পণ। মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজা অনুষ্ঠান। সবশেষে বিভিন্ন পুজোমন্ডপে আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।
পুরাণ মতে, মহালয়ার দিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। এ দিন থেকেই দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয়। মহালয়া মানেই আর ৬ দিনের প্রতীক্ষা মায়ের পূজার। আর এই দিনেই দেবীর চক্ষুদান করা হয়।
আগামী ২০ অক্টোবর থেকে ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে দুর্গাপূজা শুরু হলেও মূলত আজ থেকেই দুর্গাপূজার আনন্দধ্বনি শুনতে পাওয়া যায়। পূজার এই সূচনার দিনটি সারা দেশে আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপিত হচ্ছে। ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।
বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দুর্গা সব অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীকরূপে পূজিত। মহামায়া অসীম শক্তির উৎস।
পুরাণে আছে, মহালয়ার দিনে, দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী কোনো মানুষ বা দেবতা কখনো মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না। ফলত অসীম হ্মমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে এবং বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চায়।
ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব সম্মিলিতভাবে ‘মহামায়া’র রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন এবং দেবতাদের ১০টি অস্ত্রে সুসজ্জিত দেবী দুর্গা ৯ দিনব্যাপী যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও হত্যা করে।
মহালয়ার আর একটি দিক হচ্ছে এই তিথিতে যারা পিতৃ-মাতৃহীন তারা তাদের পূর্বপুরুষদের স্মরণ করে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে অঞ্জলি প্রদান করেন।
সনাতন ধর্ম অনুসারে এই দিনে প্রয়াত আত্মাদের মর্ত্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রয়াত আত্মার যে সমাবেশ হয় তাকে মহালয়া বলা হয়।
জেএন/রাজীব