শেষ হয়েছে অধীর অপেক্ষার পালা। এসেছে সে মহেন্দ্রক্ষণ। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বহুল প্রত্যাশিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে নদীর তলদেশে টানেল যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ।
আজ শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম তীরে একটি ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে টানেলটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
টানেল পার হয়ে বেলা ১২টায় আনোয়ারায় নদীর দক্ষিণ তীরে আরেকটি ফলক উন্মোচন করবেন।
এর মাধ্যমে চীনের সাংহাইয়ের আদলে ওয়ান সিটি, টু টাউনস স্বপ্ন বাস্তব হলো বাংলাদেশেও।
দীর্ঘ অর্ধযুগের কর্মযজ্ঞের পর আজ থেকে চালু হলো দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে প্রথম টানেল। এই টানেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটি নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।
দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী ও বন্দর নগরী চট্টগ্রাম থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে পতেঙ্গা ও আনোয়ারা উপজেলার মধ্যে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলটি ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে।
টানেলটি সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, পুরো রুটের দৈর্ঘ্য হল ৯.৩৯ কিলোমিটার (৫.৮৩ মাইল), টানেলটি ৩.৩২ কিলোমিটার (২.০৬ মাইল) দৈর্ঘ্য তৈরি করে এবং এর ব্যাস ১০.৮০ মিটার (৩৫.৪ ফুট)। এটি ১০,৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এবং এর প্রায় অর্ধেক চীনের এক্সিম ব্যাংক অর্থায়ন করেছে।
এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক নেটওয়ার্ক উন্নত হবে। মাল্টিলেন টানেল রুটটি একদিকে নেভি কলেজ এবং অন্যদিকে কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (কেইপিজেড) এবং কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি (কাফকো) এর কাছাকাছি নদীর মধ্য দিয়ে গেছে। এতে কর্ণফুলী নদীর ওপর দুটি সেতুর যানজটও কমবে।
টানেলটি চট্টগ্রামকে দুটি শহর থেকে একটি শহরে পরিণত করে অর্থনীতি এবং আঞ্চলিক ব্যবসা-বাণিজ্যকে ত্বরান্বিত করবে।
টানেল উদ্বোধনের আগে অনুষ্ঠানস্থলে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
এদিকে স্বপ্নের মেগাপ্রকল্প বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দিতে ভোর থেকেই আনোয়ারার কোরিয়ান ইপিজেড মাঠে জনসভাস্থলে আসতে শুরু করেন নেতা-কর্মীরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একনজর দেখতে দলে দলে এখনো ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন ঘিরে পুরো চট্টগ্রাম যেন মিছিল-স্লোগানের জনপদ, জয় বাংলা, শেখ হাসিনা আর নৌকা ধ্বনিতে মুখরিত।
জেএন/রাজীব