সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সুপার ওভারে দুর্দান্ত জয়ের পর তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে দুই ওপেনারের রেকর্ড জুটিতে পাকিস্তান নারী দলকে হেসেখেলে হারিয়ে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) ‘হোম অব ক্রিকেট’ মিরপুরে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ৭ উইকেটে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করেছে বাংলাদেশ নারী দল।
ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে টাইগ্রেসদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৬৬ রান তুলে পাকিস্তান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২৬ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
ফলে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতল টাইগ্রেসরা।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ১২৫ রান তুলে নেন দুই টাইগ্রেস ওপেনার। দেশের নারী ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের জুটি এটি। এর আগে, সর্বোচ্চ ১১৩ রানের জুটি গড়েছিলেন শুকতারা রহমান ও শারমিন আক্তার।
দলের জয় থেকে মাত্র ৪২ রান বাকি থাকতে নাশরা সান্ধুর বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ফারজানা হক।
সাজঘরে ফেরার আগে ৫ বাউন্ডারিতে ১১৩ বলে ৬২ রানের দারুণ এক ইনিংস উপহার দেন এই ওপেনার। এটি তার দশম হাফ-সেঞ্চুরি। আর প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই মাইলফলকে নাম তুলেছেন তিনি। এ ছাড়া লাল-সবুজের জার্সিতে একমাত্র সেঞ্চুরিও তারই দখলে।
ফারজানার পর আরেক ওপেনার মুর্শিদাকেও ফেরান নাশরা। ফেরার আগে ৬ বাউন্ডারিতে ১০৬ বলে ক্যারিয়ার সেরা ৫১ রানের ইনিংস খেলেন মুর্শিদা।
এরপর ক্রিজে নেমে অধিনায়ক জ্যোতির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানা-আউটের ফাঁদে পড়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ফাহিমা।
তবে এরপর আর কোনো উইকেট না হারালে ২৬ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটের জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। মোস্তারি ১৯ ও জ্যোতি ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে, টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তানের মেয়েরা। ব্যাটিংয়ে নেমে এদিন শুরুটা ভালোই করেছিল সফরকারীরা।
উদ্বোধনী জুটিতে ৬৫ রান আসে তাদের ব্যাট থেকে। ৬১ বলে ৩১ রান করা সাদাফ শামাসকে এলবিডব্লিউ করে বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরান নাহিদা আক্তার। দ্বিতীয় উইকেটে মুনীবা আলির সঙ্গে ২৮ রানের জুটি গড়েন ওপেনার সিদরা আমিন। ৩৬ বলে ১৪ রান করা মুনীবা দলীয় ৯৩ রানে স্বর্ণা আক্তারের শিকার হন।
এরপর সিদরা একপ্রান্ত আগলে রেখে রানের চাকা সচল রাখলেও টাইগ্রেস স্পিনারদের তোপে তাকে সঙ্গ দিতে ব্যর্থ হন বিসমাহ মারুফ, আলিয়া রিয়াজ, নিদার দার ও নাজিয়া আলভিরা। চারজনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮ রান করেছিলেন নিদা দার।
অষ্টম উইকেটে এসে ৯ বলে ১১ রান করে নাহিদা শিকার হন দিয়ানা বাইগ। শেষ উইকেটে সিদরাকে সঙ্গ দেন সাদিয়া ইকবাল। ওয়ান ম্যান আর্মি হয়ে ১৪৩ বল মোকাবিলায় শেষ পর্যন্ত ৮৪ রানে অপরাজিত থাকেন সিদরা।
উল্লেখ্য, সিরিজের প্রথমে ম্যাচে ৫ উইকেট হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে বোলারদের দারুণ নৈপুণ্যে ১৬৯ রানের টার্গেট দিয়ে পাকিস্তানকে ১৬৯ রানেই আটকে দিয়েছিল টাইগ্রেসরা।
এরপর সুপার ওভারে নিগার সুলতানার জ্যোতির বীরত্বে জয় তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। এরও আগে, ২-১ ব্যবধানে পাকিস্তানের সঙ্গে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
জেএন/রাজীব