বয়ঃসন্ধিকালটা ছেলে মেয়ে সবার জন্যই বেশ চ্যালেঞ্জিং। এইসময় শারীরিক পরিবর্তনের সাথে সাথে কিছু মানসিক পরিবর্তনও আসে। এমনকি স্কিনে প্রথম একনে দেখা দেয়, পোরস ভিজিবল হতে শুরু করে! আবার পড়ালেখা, সোশ্যাল লাইফ, হরমোনাল প্রবলেম, মুড সুয়িং এই সবকিছুর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। হেলদি স্কিন পেতে এই সময় একদম বেসিক স্কিনকেয়ার রুটিন মেনটেইন করতে হবে। সেই সাথে টিনেজে ত্বকের যত্নে উইকলি রুটিনে ফেইস মাস্ক অ্যাড করা যেতে পারে। এই সময়ে স্কিনে কমন কিছু প্রবলেম দেখা দেয়, যেমন- ব্রণ, অতিরিক্ত তৈলাক্তভাব, ডার্ক প্যাচ, সানট্যান ইত্যাদি। তাই একটু এক্সট্রা কেয়ার তো নিতেই হবে! চলুন জেনে নেই বিস্তারিত।
এই বয়সে হরমোনাল পরিবর্তনের জন্য ত্বকের সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ডগুলো বেশি পরিমাণে সেবাম নিঃসরণ করে। তাই সঠিকভাবে ত্বকের পরিচর্যা না করলে পিম্পলস, ব্ল্যাকহেডস এই স্কিন প্রবলেমগুলো দেখা দেয় সহজে। টিনেজারদের স্কিন ম্যাচিউর স্কিনের তুলনায় একটু ডিফারেন্ট হয়ে থাকে, আমরা সবাই এটা জানি। হার্শ কেমিক্যালের ব্যবহার টিনেজ স্কিনকে সহজেই ড্যামেজ করে দিতে পারে। সিম্পল স্কিনকেয়ার রুটিন ফলো করার পাশাপাশি স্কিন প্রবলেমের সল্যুশনে ঘরোয়া প্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে।
- স্ট্রবেরি ফেইস মাস্ক
স্ট্রবেরিতে আছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টিজ ও ভিটামিন সি। এই ফেইস মাস্কটি ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে ও ত্বককে প্লাম্পি করে তুলতে দারুণ কার্যকরী।
যা যা লাগবে-
২ চামচ ম্যাশড স্ট্রবেরি
১ টেবিল চামচ টকদই
উপাদানগুলো ভালোভাবে মিক্স করে নিন। এরপর ফেইসে অ্যাপ্লাই করুন, ২০ মিনিট রেখে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এই মাস্কটি সপ্তাহে এক বা দু’বার ব্যবহার করতে পারেন।
- রোজ পেটাল ফেইস মাস্ক
গোলাপের পাঁপড়ি স্কিনে ন্যাচারাল গ্লো নিয়ে আসে, স্পটস রিমুভ করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এতে আছে ন্যাচারাল অ্যান্টি অক্সিডেন্টস। অয়েল কন্ট্রোলেও এই উপাদানটি বেশ ইফেক্টিভ।
যা যা লাগবে-
২ চামচ রোজ পেটাল পাউডার
১/২ চা চামচ মধু
১ টেবিল চামচ টকদই
উপাদানগুলো ভালোভাবে মিক্স করে নিয়ে ফেইসে অ্যাপ্লাই করুন। ১০/১৫ মিনিট রেখে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। ইনস্ট্যান্ট গ্লো দেখতে পাবেন সাথে সাথেই!
- বানানা ফেইস মাস্ক
হেয়ার ও স্কিনের জন্য বানানা খুবই বেনিফিশিয়াল। অনেকেই আমরা চুলের যত্নে কলা ব্যবহার করে থাকি, কিন্তু ত্বকের যত্নেও যে এই ফলটি দারুণ কার্যকরী, সেটা অনেকেই জানেন না! কলাতে আছে ভিটামিন বি৬, পটাশিয়াম সহ কিছু দরকারি নিউট্রিয়েন্টস; যা ত্বককে হেলদি ও ফ্ললেস রাখতে বেশ কার্যকরী।
যা যা লাগবে-
অর্ধেক পাকা কলা
১ চা চামচ মধু
২ টেবিল চামচ দুধ
সব উপাদানগুলো একসাথে মিক্স করে নিন। ১০/১৫ মিনিট ফেইসে রেখে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। ব্যস, স্কিন বেশ স্মুথ হবে সাথে সাথে, সেই সাথে ময়েশ্চারও রিটেন হবে।
- উপটান
সানট্যান কমিয়ে এনে স্কিনকে গ্লোয়ি ও ব্রাইট করে তুলতে উইকলি স্কিনকেয়ার রুটিনে উপটান ইনক্লুড করুন। বিশেষ কোনো অকেশনের আগে সেলফ প্যাম্পার করতেও এটি একটি দারুণ অপশন।
যা যা লাগবে-
২ চা চামচ উপটান
১ চা চামচ টকদই
১ টেবিল চামচ রোজ ওয়াটার
এই উপকরণগুলো মিক্স করে নিন, ফেইসে অ্যাপ্লাই করুন। ১০ মিনিট রেখে ভালোভাবে ওয়াশ করে ফেলুন।
- শসার হাইড্রেটিং ফেইস মাস্ক
একনে প্রন ও অয়েলি স্কিনের জন্য শসার ফেইস মাস্ক দারুণ কার্যকরী। শসা ইনফ্ল্যামেশন প্রিভেন্ট করে, অয়েল কন্ট্রোলে হেল্প করে আর সেই সাথে ত্বকে হাইড্রেশন প্রোভাইড করে।
যা যা লাগবে-
১ টেবিল চামচ শসার রস
১ চা অ্যালোভেরা জেল
সামান্য মধু
এই তিনটি উপকরণ ভালোভাবে মিক্স করে নিয়ে ফেইসে অ্যাপ্লাই করুন। ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ভালোভাবে ওয়াশ করে ফেলুন।
হোমমেড ফেইস মাস্ক তৈরির ক্ষেত্রে কিছু জিনিস মনে রাখতে হবে-
- সবসময় চেষ্টা করবেন ফ্রেশ ফ্রুট ও ইনগ্রেডিয়েন্ট দিয়ে প্যাক তৈরি করার
- ফ্রিজে সংরক্ষণ না করাই বেটার যেহেতু প্রিজারভেটিভ নেই
- যেকোনো মাস্ক বা প্যাক ব্যবহার করার আগে স্কিন ক্লিন করে নিন
- ত্বকের জন্য হার্শ, এমন প্রোডাক্ট এড়িয়ে চলুন যেমন- চালের গুঁড়ো, বেকিং সোডা, কফি
- লেবু, মাল্টা এগুলো অ্যাসিডিক হওয়াতে সরাসরি ফেইসে অ্যাপ্লাই করবেন না
- ত্বকের ধরন বুঝে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন
- উইকে ১/২ বার এর বেশি DIY ফেইস মাস্ক অ্যাপ্লাই করার প্রয়োজন নেই
টিনেজ থেকেই ত্বকের যত্ন নিলে বা বেসিক স্কিনকেয়ার রুটিন ফলো করলে, বয়স বাড়লেও স্কিন থাকবে ফ্ললেস ও হেলদি।