খালেদা জিয়াও যদি পটিয়া থেকে নির্বাচন করেন তারপরও সামশুল হক জিতবেন বলে বিশ্বাস আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের। অন্যদিকে নির্বাচন সুষ্ঠু হলে নৌকার প্রার্থীর জামানত বাতিল হবে বলে মনে করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। যদিও তাদের এ বক্তব্যের প্রমাণ পেতে অপেক্ষা করতে হবে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে উৎসবের আমেজ পরিলক্ষিত হচ্ছে চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে। নৌকা, ধানের শীষ আর লাঙ্গল নিয়ে উপজেলার অলি-গলি, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, অফিসপাড়া, চায়ের দোকানসহ সবখানেই চলছে আলোচনা। বিশেষ করে চায়ের দোকান ঘিরে জমে উঠেছে নির্বাচনী বিতর্ক।
সরকারি দল আওয়ামী লীগ থেকে চট্টগ্রাম -১২ (পটিয়া) আসনে ৯ জন দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দেন।। এরমধ্যে আলোচনায় ছিলেন মাত্র দুইজন। তারা হলেন বর্তমান সাংসদ সামশুল হক চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোহাম্মদ নাছির। কিন্তু মনোনয়ন পেয়েছেন সামশুল।
অপরদিকে বিএনপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ৭ জন। এরমধ্যে আলোচনায় আছেন ৩ জন। তারা হলেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ গাজী শাহজাহান জুয়েল, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ইদ্রিস মিয়া ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম । এখনো কেন্দ্র থেকে নাম ঘোষণা হয়নি। তবে এনামুল হক এনাম দল থেকে মনোনয়ন পাচ্ছেন, এ ব্যাপারে অনেকে আশাবাদী।
সাংসদ সামশুল হক চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, পটিয়ায় খালেদা জিয়া আসলেও আমি ৪০ হাজার ভোটে জয়লাভ করব। ২০০৮ সালের মত নির্বাচন হলে বিপুল ভোটে জয়লাভ করব। কারণ আমি জনগণের জন্য কাজ করেছি। পটিয়ায় সর্বোচ্চ উন্নয়ন করেছি। কারো ক্ষতি করিনি।
দলীয় কোন্দল বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন ,পটিয়ায় কোনো কোন্দল নেই। গণতান্ত্রিক দেশে যে কেউ দল থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন । পটিয়া আওয়ামী লীগের অনেকে ‘পরিবর্তন চাই’ বলে স্লোগান দিয়েছেন। তাদেরকে আমি কিছুই বলিনি। তারা আমার বিরুদ্ধে যা বলছে তা ডাহা মিথ্যা। যারা এসব বলছেন তারা আসলে ছিন্নমূল। আমি তৃণমূলের সঙ্গে আছি । তবু তারা যেহেতু আওয়ামী লীগার, আমি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম জয়নিউজকে বলেন , পটিয়ায় ধানের শীষের গণজোয়ারে ভেসে যাবে নৌকা। অবাধ, নিরপক্ষ, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে ধানের শীষ বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। নৌকার প্রার্থীর জামানত বাতিল হবে। আওয়ামী লীগ নির্বাচন বানচাল করার জন্য প্রতিদিন বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। নির্বাচনকে আমরা আন্দোলন হিসেবে নিয়েছি। কেউ জনগণের অধিকার ছিনিয়ে নিতে পারবে না।
বর্তমান সাংসদ সামশুল হক চৌধুরীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অহংকার করছে। ভোটের মাধ্যমে এর জবাব দেবে জনগণ। বিএনপি ম্যাডাম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ । মনোনয়ন পাবেন একজন। সবাইকে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র । আশা করি, দল আমাকে মনোনয়ন দেবে। মনোনয়ন না পেলে মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করব।
আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা জয়নিউজকে জানান, মনোনয়ন প্রতিযোগিতায় দলের অনেক নেতা-কর্মী দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এর মূলে দলের দক্ষিণ জেলা সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোহাম্মদ নাছিরের অনুসারীরা। তাই হাই কমান্ডের নির্দেশে নির্বাচনের সময় নৌকার জন্য কাজ করলেও বর্তমান সাংসদের প্রতি ক্ষোভ থেকে যাবে অনেকের।