দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরিকদের জন্য সাতটি আসন ছেড়ে দিলো আওয়ামী লীগ।
আসনগুলো হলো- কুষ্টিয়া-২, লক্ষ্মীপুর-৪, বগুড়া-৪, বরিশাল-৩, রাজশাহী-২, সাতক্ষীরা-১ এবং পিরোজপুর-২।
এই সাত আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ জাসদ এবং ওয়ার্কার্স পার্টিকে তিনটি করে আসন আর একটি দিয়েছে আনোয়ার মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি-জেপিকে।
এ তথ্য জানিয়েছেন ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, শরিকদের সাথে আলোচনা চলছে এখনও সব চূড়ান্ত নয়। আপাতত সাতটি আসনে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কুষ্টিয়া-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। দলীয় প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণার সময় এই আসনে শুরু থেকেই কোনো প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ।
লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে ১৪ হয়ে লড়বেন জাসদের মোশাররফ হোসেন। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বিকল্প ধারা বাংলাদেশের আবদুল মান্নান। ঋণ খেলাপের দায়ে এবার তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
বগুড়া-৪ আসনে ১৪ দলের হয়ে ভোটের মাঠে থাকবেন জাসদের রেজাউল করিম তানসেন। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির নূরুল ইসলাম তালুকদার। আওয়ামী লীগ এই আসনে প্রথমে তাদের প্রার্থী করেছিলো হেলাল উদ্দিন কবিরাজকে।
বরিশাল-৩ আসনে জোটের হয়ে লড়বেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছিলো সরদার মোঃ খালেদ হোসেনকে। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির গোলাম কিরবিয়া টিপু।
রাজশাহী-২ আসনে লড়বেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ ফজলে হোসেন বাদশা তিনি এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। আওয়ামী লীগ এই আসনে মোহাম্মদ আলীকে মনোনয়ন দিয়েছিলো।
সাতক্ষীরা-১ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহই ১৪ দলের হয়ে লড়বেন। এই আসনে আওয়ামী লীগ ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনকে মনোনয়ন দিয়েছিলো।
পিরোজপুর-২ আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুই থাকছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রথমে কানাই লাল বিশ্বাসকে মনোনয়ন দিয়েছিলো।
আমির হোসেন আমু জানান, জাতীয় পার্টির সঙ্গেও আওয়ামী লীগের আলোচনা চলছে। ১৭ তারিখ চূড়ান্ত ঘোষণা দেওয়া হবে।
এদিকে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, তিন আসন নিয়ে তারা সন্তুষ্ট নয়। জাসদ আরও আসন চায়।
একাদশ জাতীয় সংসদে বর্তমানে আওয়ামী লীগের শরিক ১৪ দলীয় জোটের আট জন সংসদ সদস্য রয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র এবং অসাম্প্রদায়িক আদর্শের ভিত্তিতে ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত হয় ১৪ দলীয় জোট।
মূলত ওই বছরের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালিয়ে অনেক নেতাকর্মীকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল দলগুলোকে নিয়ে ২৩ দফা ঘোষণা দিয়ে ১৪ দলীয় জোটের যাত্রা শুরু হয়।
২০০৮ সাল থেকে গত তিনটি সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলের শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করে ভোটে অংশ নেয় আওয়ামী লীগ। গত নির্বাচনেও জোটসঙ্গীদের ১৩ আসন ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ।
জোটের অন্যান্য দলের সিংহভাগ প্রার্থীই আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেন। এবারের ভোটেও নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগতভাবে ভোট করার কথা জানিয়ে ১৪ দলের ছয়টি দল নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেয়।
তফসিল ঘোষণার পর মাত্র দুটি আসন ছেড়ে ২৯৮ আসনেই প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এই দুই আসন হলো জাসদের হাসানুল হক ইনুর কুষ্টিয়া-২ ও জাতীয় পার্টির সেলিম ওসমানের নারায়ণগঞ্জ-৫।
এবার ১৪ দলের শরিকদের জন্য আওয়ামী লীগ কতটি আসনে ছাড় দেবে তা নিয়ে গুঞ্জন চলছিলো।
জেএন/পিআর