চালকের অবহেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় কারও মৃত্যু হলে সর্বোচ্চ সাজা পাঁচ বছরের কারাদণ্ড আর জরিমানার বিধান রেখে মঙ্গলবার সড়ক পরিবহন আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তবে আগের মতোই চালকের পরিকল্পিত হত্যার উদ্দেশ্য প্রমাণ করা গেলে ৩০২ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিতে পারবে আদালত।
বাংলাদেশের মতো বিশ্বের অন্যান্য দেশেও দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর জন্য চালকের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রয়েছে। তবে একের দেশের সাজা একেক রকম।
ইউরোপ ছাড়া বাকি অঞ্চলে সাজার মাত্রা মোটামুটি একই। ইউরোপে শাস্তির মাত্রা বেশি হলেও সেখানে চালককে সাজা দেয়ার আগে সড়ক ব্যবস্থাপনায় গাফিলতি আছে কি না, যাত্রী বা পথচারীর দায়িত্বহীনতা ছিল কি না সেগুলো পর্যালোচনা করে দেখা হয়।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একেক দেশে একেক রকমের সাজার বিধান আছে। ভারতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সর্বোচ্চ সাজা দুই বছর। পাকিস্তানে বেপরোয়া গাড়ি চালনায় মৃত্যু হলে সর্বোচ্চ সাজা দুই বছর (পেনাল কোড ২৭৯)। শ্রীলঙ্কায় সড়ক দুর্ঘটনার সর্বোচ্চ শাস্তি ২৫ হাজার রুপি জরিমানা। নেপালে সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছর থেকে ১২ বছর।
এছাড়া সিঙ্গাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড। জাপানে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছর।
জার্মানিতে সড়ক দুর্ঘটনার সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছর। ফ্রান্সে সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছর। যুক্তরাজ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছর।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে রাজ্য অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনার আলাদা আইন রয়েছে। নিউ ইয়র্কে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে সর্বোচ্চ সাজা অনধিক ৭ বছর, নিউ জার্সিতে তা ৫ বছর থেকে ১০ বছর। ক্যালিফোর্নিয়ায় সর্বোচ্চ সাজা পাঁচ বছর।
গত ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে সড়কে নামে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা যে নয় দফা দাবি জানিয়েছিল তাতে দুর্ঘটনায় চালকের সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে ফাঁসির দাবি জানানো হয়েছিল। তবে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা বরাবর এই সাজার বিরোধীরা করে আসছিল। এমন সাজা হলে নানা সময় গাড়ি চালানো বন্ধের হুমকিও এসেছে তাদের পক্ষ থেকে।