গান গেয়ে দর্শক-শ্রোতা মাতালেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ক্যালকাটা ব্লাইন্ড স্কুল ময়দানে অনুষ্ঠিত বেহালা উৎসবে যোগ দিয়ে সংগীত পরিবেশন করেন এই অভিনেতা-গায়ক চঞ্চল।
একের পর এক ‘ধর বন্ধু আমার কেহ নাই’, ‘ফুল ফুটেছে, গন্ধে সারা মন’, ‘জল ভরো জল ভরো রাধে’, ‘বকুল ফুল বকুল ফুল’- গানগুলি পরিবেশন করেন চঞ্চল।
চঞ্চলের গলায় ভূপেন হাজারিকার গাওয়া ‘মেঘ থম থম করে, কেউ নেই’, ‘মানুষ মানুষের জন্য’- গানগুলিও শ্রোতাদের মন জয় করে।
শ্রোতাদের অনুরোধে গাইলেন ‘হাওয়া’ ছবির সেই বিখ্যাত গান ‘সাদা সাদা কালা কালা’। শেষে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গাইলেন ‘বাহান্নতে মুখের ভাষা কিনছি বুকের খুনে রে’।
এর আগে, নিজের গান গাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন ‘আমি খুব একটা গান করি না। কিন্তু আয়োজকদের অনুরোধ ফেলতে পারিনি। এই অনুষ্ঠানে আসতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে। গান গেয়ে আমি মানুষকে মুগ্ধ করতে পারবো কিনা জানি না। তারপরেও আমি গাইবো।
তিনি বলেন, ‘আসলে দর্শকদের অনুরোধে ভালো হোক বা মন্দ হোক- সবকিছুই করতে হয়।
নাট্য উৎসবে যোগ দিতে নাট্যদল ‘আরণ্যক’কে সাথে নিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর থেকে কলকাতায় রয়েছেন চঞ্চল।
উত্তরপাড়া, কল্যাণী, মধ্যমগ্রামসহ মোট ছয়টি জায়গায় শো করেন এই অভিনেতা-গায়ক।
গত কয়েক দশক ধরে দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয় চঞ্চল জানান, ‘বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তারা আমার অভিনয় পছন্দ করেন। সেই সাথে আমার কাছে বাড়তি পাওনা পশ্চিমবঙ্গের অগণিত দর্শক। এই বিষয়টিও আমার অনেক ভালো লাগে।
পরিচালক মৃণাল সেনের বায়োপিক ‘পদাতিক’ ছবিতে অভিনয় নিয়ে চঞ্চল বলেন, ‘তার মত এত বড় মাপের একজন মানুষ, আমরা ওর জন্য গর্ববোধ করি।
সবচেয়ে বড় কথা উনি বাংলাদেশের মানুষ, ফরিদপুরে তার জন্ম। এই উপমহাদেশে তার মত এত বড় মাপের একজন নির্মাতার নখের যোগ্য আমরা নই।
বায়োপিক চরিত্রে অভিনয় করাটা যে কতটা কঠিন তা স্বীকার করে নিয়ে চঞ্চল বলেন, ‘যখন কোন বিখ্যাত মানুষের চরিত্রে অভিনয় করতে হয় সেটা খুবই চাপের।
কারণ দর্শক যখন কোন সিনেমা হলে ঢুকবেন, তখন আমাদের এই চরিত্রের সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করবেন। সেই চরিত্র ফুটিয়ে তোলার জন্য অভিনেতা যথেষ্ট চেষ্টা করেন কিন্তু তারপরেও অনেক ফাঁকফোকর থেকে যায় কারণ আমি সেই মানুষটি নই। তাই সেই চাপটা আমারও ছিল কিন্তু আমি চেষ্টা করেছি।’
খুব শিগগিরি দুই বাংলায় এই ছবিটি মুক্তি পেতে চলেছে বলেও জানান তিনি।
জেএন/পিআর