বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর হাতে উঠেছে নৌকার টিকিট। এখন পুরোদমে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। তবে বাঁশখালীতে এবারের নির্বাচন নিয়ে রয়েছে নানা সমীকরণ। মোস্তাফিজকে ঘিরে রয়েছে চার মহারথীর রাজনৈতিক হিসাব।
রাজনৈতিক সফলতা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে এ আসনে নিজেকে বিজয়ী ভাবছেন মোস্তাফিজ। যদিও তাঁর একদিকে আছেন বিএনপির সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, আরেক দিকে বাঁশখালীর অন্যতম পীর মাওলানা ইসহাকের ছেলে জহিরুল ইসলাম। তিনি আবার বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও বাঁশখালী জামায়াতের আমীর।
এদিকে মোস্তাফিজের নিজ দলেই একদিকে আছেন প্রয়াত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ভাগিনা আব্দুল্লাহ কবির লিটন, অন্যদিকে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক মুজিবুর রহমান সিআইপি। নির্বাচনি বৈতরণী পার হতে এই চার চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখেইে এগোতে হবে মোস্তাফিজকে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিএনপি-জামায়াতের বিরোধিতা যৌক্তিক হলেও লিটন-মুজিবের সঙ্গে মোস্তাফিজের দূরত্ব নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে কি-না তা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে আরো কয়েকটা দিন। বাঁশখালী রাজনীতি সচেতনদের অভিমত, লিটন-মুজিবকে সঙ্গে নিয়ে হাঁটতে না পারলে বাঁশখালীর নির্বাচনি পথ পাড়ি দিতে বেগ পেতে হবে মোস্তাফিজকে। এ অবস্থায় এখনই বাঁশখালী আওয়ামী লীগের এই তিন মহারথীর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।
এ বিষয়ে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমার সঙ্গে লিটনের কথা হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুই ভাই কাজ করবো। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে এ আসন উপহার দিবো।
আওয়ামী লীগ থেকে মনোয়নপ্রত্যাশী মুজিবুর রহমান সিআইপির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদি উনি আওয়ামী লীগের আদর্শে বিশ্বাসী হন তাহলে নৌকার পক্ষে তিনিও কাজ করবেন।
মোস্তাফিজের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে বিএনপি-জামায়াত। কারণ বিএনপি থেকে এ আসনে নির্বাচন করতে চান দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী। আবার জামায়াত থেকে এ আসনে নির্বাচন করতে চান জহিরুল ইসলাম। তবে জোটের সমীকরণ জটিলতায় পড়ে জাফর-জহির যদি মুখোমুখি হন সেক্ষেত্রে গন্তব্যে পৌঁছা মোস্তাফিজের জন্য অতটা কঠিন হবে না বলেই মনে করেন রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, মনোনয়নের খবর শুনে আমার জন্য বাঁশখালীর ঘরে ঘরে মা-বোনেরা রোজা রাখা শুরু করেছেন। নামাজ পড়ে দোয়া করছেন। আমার উপর তাদের বিশ্বাস ও ভালোবাসা রয়েছে।
নিজ সময়ের রাজনৈতিক সফলতা ও উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচনে বাঁশখালীর ১০টি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীকে জয়ী করে এনেছিলাম। জাফরুল ইসলামের ইউনিয়ন, উপজেলা চেয়ারম্যান জহিরুলের ইউনিয়ন শেখেরখীলেও নৌকার প্রার্থী জয়ী হয়েছিল। চাঁদপুর থেকে বাঁশখালীর শেষপ্রান্ত পৌঁছাতে এখন সময় লাগে দেড় ঘণ্টা। আগে ভাঙা সড়কে এ পথ পাড়ি দিতে সময় লাগত তিন থেকে চার ঘণ্টা। মহাসড়ক সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছি। স্কুল-কলেজ-মাদ্রসাগুলোতে সংকট নেই। কারণ জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন বাঁশখালির বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গেছে। ধর্ম নিয়ে মিথ্যাচার করে বিএনপি-জামায়াত আর ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে পারবে না।