আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল উৎসবমুখর। এ দিন মনোনয়ন ফরম জমা দিতে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীদের ঢল নামে।
বুধবার (২৮ নভেম্বর) রিটার্নিং অফিসার ও বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নানের কাছে নগরের প্রার্থীরা এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেনের কার্যালয়ে উপজেলার প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম জমা দেন।
আ’লীগের ৫ প্রার্থীর জোট
নগরের পাঁচটি আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা জোট বেঁধে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে যান। এ জোটের নেতৃত্বে ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নগরপিতা আ জ ম নাছির উদ্দীন।
মনোনয়ন ফরম জমা দেন নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং) আসনের সাংসদ আফছারুল আমিন, চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনের সাংসদ মইন উদ্দীন খান বাদল, চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর) আসনের সাংসদ এম এ লতিফ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী) আসনের ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনের সাংসদ দিদারুল আলম।
মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের ব্যরিস্টার নওফেল বলেন, ইভিএম নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি নেই। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের কারণে জনগণ নৌকা প্রতীকে ভোট দেবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে চট্টগ্রাম-৯ আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনের সুযোগ দিয়েছেন। তাই আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।
মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার সময় নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীনসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির ৩ হেভিওয়েট প্রার্থী
মনোনয়ন ফরম জমা দিতে আসেন বিএনপির তিন হেভিওয়েট প্রার্থী। প্রথমেই আসেন চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং) আসনের প্রার্থী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান এবং চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনের প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী মোরশেদ খান। এরপর মনোনয়ন ফরম জমা দেন চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর) আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহামুদ চেীধুরী।
মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে। এখনো আমরা আন্দোলন ও আলোচনা দুটোতেই আছি। লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনো তৈরি হয়নি। আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।
এসময় তিনি দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান।
দোয়া চাইলেন লতিফ-মোরশেদ খান
মনোনয়ন ফরম জমা দিতে আসা প্রার্থীদের উপস্থিতিতে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। উৎসবের পরিবেশটা আরো রঙিন করেন আওয়ামী লীগের সাংসদ এমএ লতিফ ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোরশেদ খান। সবাইকে অবাক করে দিয়ে এ দুই হেভিয়েট প্রার্থী একে অপরের কাছে দোয়া চান। আবার আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে জড়িয়ে ধরেন এমএ লতিফ।
জেলা প্রশাসন কার্যালয়
বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিন আওয়ামী লীগ প্রার্থী। তারা হলেন চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনের সাংসদ ড. হাছান মাহমুদ, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সাংসদ সামশুল হক চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান।
নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা
মনোনয়ন ফরম জমার শেষ দিন হওয়ায় নাশকতার শঙ্ক্ষায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ছিল বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক কার্যালয়সহ আশপাশের এলাকায়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহলের পাশাপাশি মোতায়েন ছিল অতিরিক্ত পুলিশ।