দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে বেসরকারি ফলাফলে ১২৪ প্রার্থীর মধ্যে ৯৭ জনই জামানত হারিয়েছেন। এর মধ্যে আছেন ছয়টি রাজনৈতিক দলের দলীয় প্রধান ও শীর্ষ নেতারা।
নির্বাচনি ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের ১২ জন, স্বতন্ত্র ৩ জন ও জাতীয় পার্টির একজন গত বরিবারের নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন।
পরাজিতদের মধ্যে মাত্র ১১ স্বতন্ত্র প্রার্থী জামানত রক্ষা করতে পেরেছেন। ৯৭ জন প্রার্থীরা কাস্ট হওয়া ভোটের ৮ ভাগের এক ভাগ পাননি। ফলে তারা কমিশনে জমা করা জামানত ফিরে পাবেন না।
চট্টগ্রামে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ছোট দলের বড় নেতা আছেন ছয়জন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-২ আসনে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ, চট্টগ্রাম-৮ আসনে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এস এম আবুল কালাম আজাদ ও জাতীয় পার্টির সোলায়মান শেঠেরও জামানতও বাজেয়াপ্ত হয়েছে। শেঠকে আসনটি ছেড়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ।
চট্টগ্রাম-১২ আসনে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এম এ মতিনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম-৫ আসনে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ফোরামের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন এবং চট্টগ্রাম-১০ ও ১১ আসনে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মহাসচিব আবুল বাশার মুহাম্মদ জয়নুল আবেদিনের জামানতও বাজেয়াপ্ত হয়েছে। যদিও নাজিম তৃণমূল বিএনপি থেকে নির্বাচন করেছেন।
চট্টগ্রাম–১ (মীরসরাই) আসনে নৌকা প্রতীকে জয়ী মাহবুব উর রহমান রুহেল ও তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. গিয়াস উদ্দীন ছাড়া আরও কোনো প্রার্থী নির্ধারিত ভোটের বেশি পাননি। বাকি ৫ প্রার্থীর জামানত বাতিল হয়েছে।
চট্টগ্রাম–২ (ফটিকছড়ি) আসনে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনি এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী হোসাইন মো. আবু তৈয়ব ছাড়া বাকি ৭ প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
চট্টগ্রাম–৩ (সন্দ্বীপ) আসনে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী মাহফুজুর রহমান ও তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী ছাড়া বাকি ৫ প্রার্থীর জামানত বাতিল হয়েছে।
চট্টগ্রাম–৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী এসএম আল মামুন ছাড়া বাকি ৬ প্রার্থীর জামানত বাতিল হয়েছে।
চট্টগ্রাম–৫ (হাটহাজারী) আসনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে বিজয়ী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী ছাড়া বাকি ৫ প্রার্থীর জামানত বাতিল হয়েছে।
চট্টগ্রাম–৬ (রাউজান) আসনে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী ছাড়া বাকি ৪ প্রার্থীর জামানত বাতিল হয়েছে।
চট্টগ্রাম–৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী ড. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ ছাড়া বাকি ৫ প্রার্থীর জামানত বাতিল হয়েছে।
চট্টগ্রাম–৮ (বোয়ালখালী–চান্দগাঁও) আসনে কেটলি প্রতীকে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুচ ছালাম এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফুলকপি প্রতীকের অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয় কুমার চৌধুরী ছাড়া অপর ৮ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম–৯ (কোতোয়ালী–বাকলিয়া) আসনে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী ছাড়া বাকি ৬ প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
চট্টগ্রাম–১০ (ডবলমুরিং–পাহাড়তলী) আসনে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ মনজুর আলম ছাড়া বাকি ৮ প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
চট্টগ্রাম–১১ (বন্দর–পতেঙ্গা) আসনে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী এম আবদুল লতিফ এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র জিয়াউল হক সুমন ছাড়া বাকি ৫ প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
চট্টগ্রাম–১২ (পটিয়া) আসনে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরী ছাড়া বাকি ৭ প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
চট্টগ্রাম–১৩ (আনোয়ারা–কর্ণফুলী) আসনে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ছাড়া অবশিষ্ট ৬ প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
চট্টগ্রাম–১৪ (চন্দনাইশ) আসনে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল জব্বার চৌধুরী ছাড়া অবশিষ্ট ৬ প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
চট্টগ্রাম–১৫ (সাতকানিয়া–লোহাগাড়া) আসনে ঈগল প্রতীকে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোতালেব এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ছাড়া অবশিষ্ট ৫ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম–১৬ (বাঁশখালী) আসনে ঈগল প্রতীকে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবুর রহমান এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল্লাহ কবির লিটন ছাড়া অবশিষ্ট ৭ প্রার্থীর জামানত বাতিল হয়েছে।
জেএন/পিআর