চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে ঘুমন্ত অবস্থায় বাবুর্চি মোরশেদুল আলম (৪২) এর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। অচেতন অবস্থায় ওই কমিউনিটি সেন্টারেই পড়ে ছিলেন তার হেলপার জামাল উদ্দিন।
গত শুক্রবার (১২ জানুয়ারি)দিবাগত রাতে উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ড মির্জাখীল রয়েল পার্ক কমিউনিটি সেন্টারে ঘটনাটি ঘটে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে নিহতের লাশটি উদ্ধার করে সাতকানিয়া থানা পুলিশ। অতিরিক্ত মদ্যপান অথবা খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণেই হতাহতের ঘটনাটি ঘটেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
নিহত মোরশেদুল আলম উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ড মির্জাখীল ছোট হাতিয়া বাদশার বাপের বাড়ীর আবদুল হাকিমের ছেলে। অচেতন অবস্থায় উদ্ধার জামাল উদ্দিন একই ইউনিয়নের সাইরতলী পাড়ার বেদার সওদাগরের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে মির্জাখীল এলাকার রয়েল পার্ক কমিউনিটি সেন্টারে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানের বাবুর্চি হিসেবে নিযুক্ত মোরশেদুল আলম।
বিয়ের অনুষ্ঠানের রাতের সকল কার্যক্রম শেষে ফজরের নামাজের পূর্বে জামালসহ কমিউনিটি সেন্টারের ভিতরের রুমে দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন।
পরবর্তীতে সকাল বেলা অন্যান্য লোকজন কাজ করার জন্য কমিউনিটি সেন্টারে আসলে রুমের ভেতর থেকে দরজা বন্ধ আবস্থায় দেখে তাদেরকে ডাকাডাকি করে।
অনেক্ষণ ডাকাডাকির পরও তাদের কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙ্গে দুজনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। দুজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোরশেদুল আলমকে মৃত ঘোষণা করেন এবং মো. জামালকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরন করেন।
ধারনা করা হচ্ছে রাতে অতিরিক্ত মদ্যপান করার কারনে অথবা খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণেই তারা অচেতন হয়ে পড়েছিলেন।
নিহতের ছোট ভাই মাইনুল ইসলাম মানিক জানান, আমার জানামতে আমার ভাই এবং আমার ভাইয়ের সাথে ঘুমানো ব্যক্তি কখনো কোন ধরনের নেশার সাথে যুক্ত ছিলেন না।
কেনো তাদের এই ধরনের মৃত্যু সেটা বুঝতে পারছিনা। ভোর চারটার সময়ও আমার ভাই স্থানীয় এক মাংস বিক্রেতার সাথে কথা বলেছে বলে জানতে পেরেছি।
অচেতন অবস্থায় উদ্ধারকৃত জামাল উদ্দিনের ছোট ভাই নেচার উদ্দিন জানান, অচেতন অবস্থায় আমার ভাইকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন, এখনো পর্যন্ত জ্ঞান ফিরেনি।
তিনি সিগারেট ব্যতিত কোন ধরনের নেশার সাথে যুক্ত ছিলেন না। এমন ঘটনার কারণ ঠিক বুঝতে পারছিনা।
সাতকানিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ প্রিটন সরকার জানান, কমিউনিটি সেন্টারের রুমের দরজা ভেঙ্গে অচেতন অবস্থায় দু’জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
অপরজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে অতিরিক্ত মদ্যপান অথবা খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণেই এমনটা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর যথাযথ কারণ নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।
জেএন/পিআর