ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসক দম্পতির ফ্ল্যাট বাসা থেকে তামান্না আক্তার (১৪) নামে এক গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রহস্যজনক এ মৃত্যু নিয়ে স্বজনরা দাবি করছে তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে শহরের মৌলভীপাড়ার একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তামান্না কুমিল্লা মুরাদনগরের হিরাকান্দা গ্রামের সুমন মিয়ার কন্যা। তারা স্বপরিবারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ভাদুঘর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
তামান্নার পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে চিকিৎসক ইসরাতের বাবা বাবুল মিয়া ঢাকা থেকে সুমন মিয়াকে ফোন করে জানান, তামান্না গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রয়েছে। পরে সুমন তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মেয়ের লাশ দেখতে পান। তাঁদের সামনেই হাসপাতালের লোকজন তামান্নার লাশ মর্গে নিয়ে যান।
নিহতের বাবা সুমন মিয়া বলেন, প্রায় ৪ বছর আগে তার মেয়ে তামান্নাকে চিকিৎসক দম্পতি ডা. আনিসুল হক ও তার স্ত্রী ডা. ইসরাত জাহানের বাসায় গৃহকর্মীর কাজের জন্য দেন।
তবে সম্প্রতি তামান্না তার মাকে জানিয়েছে তাকে প্রায় সময় মারধর করত। এই বাসা থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রায় সময়ই বলত।
আজ সন্ধ্যায় খবর আসে তার মেয়ে মারা গেছে। তিনি বিষয়টিকে হত্যাকান্ড দাবি করে তার মেয়ের হত্যাকারীদের সুষ্ঠ বিচারের দাবি জানান।
নিহতের মা মুন্নি আক্তার বলেন, প্রায় সময়ই তামান্নার গায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখতাম। সে এখান থেকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলত। আমি তাকে বলেছিলাম তোমার বাবা এই মাসে অটো কিনবে। এরপর এখান থেকে তোমাকে নিয়ে যাব। মেয়ের সাথে এতটুকুই আমার কথা হয়েছিল। এখন খবর পেলাম মেয়ে মারা গেছে, আমি এর বিচার চাই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মির্জা মোহাম্মদ সাইফ জানান, তামান্নাকে হাসপাতালের আনার পর ইসিজি করে দেখা যায় তার মৃত্যু হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মির্জা মো. সাইফ বলেন, বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ওই কিশোরীকে হাসপাতালে আনা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।
এদিকে ঘটনার পর পর বাসায় তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায় ওই নারী চিকিৎসক। ঘটনাটি শহর জুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
জেএন/পিআর