দৈনিক দিনকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সিনিয়র সদস্য ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী আর নেই।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার পর রাজধানীর কল্যাণপুরে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন)।
তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। বছর-দুয়েক আগে প্রবীণ এই সাংবাদিকের দুটি কিডনিই বিকল হয়ে যায়। কয়েক দিন আগে অবস্থার অবনতি হলে স্পেশালাইজড হসপিটালের আইসিইউতে তার চিকিৎসা চলছিল।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জানাজা শেষে আগামীকাল বুধবার রাজধানীর রায়েরবাজার কবরস্থানে ড. রেজোয়ান সিদ্দিকীকে সমাহিত করা হবে।
ড. রেজোয়ান হোসেন সিদ্দিকীর জন্ম ১৯৫৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাঈল জেলার এলাসিন গ্রামে। বাবা মরহুম আতিকুল হোসেন সিদ্দিকী। মা মরহুমা হাওয়া সিদ্দিকী। এসএসসি পাস করেন ১৯৬৮ সালে। বলতে গেলে তার পর থেকেই জীবন সংগ্রাম শুরু। ১৯৬৯ সালে করটিয়ার সাদত কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থায় তার পড়াশোনা আপাত বন্ধ হয়ে যায়।
হুলিয়া নিয়ে তিনি চলে যান চট্টগ্রামে তার চাচা মোফাখখর হোসেন সিদ্দিকীর আশ্রয়ে। এরপর রেজোয়ান সিদ্দিকী চলে আসেন ঢাকায়। জীবন সংগ্রামের এক ভিন্ন মাত্রা শুরু হয় তখন থেকেই।
সাংবাদিকতা পেশায় ঢুকেছেন ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে দৈনিক বাংলায়। প্রুফ রিডার হিসেবে শুরু করেছিলেন। সেখানে শেষে ছিলেন সিনিয়র সহকারী সম্পাদক। একই সাথে ছিলেন ফিচার এডিটর, সিনে সম্পাদক এবং সাহিত্য সম্পাদক।
খবরের কাগজে সাংবাদিকতার এমন কোনো পদ নেই, যে পদে কাজ করেননি তিনি। প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন চার বছর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ১৯৭৩ সালে। ১৯৭২ সাল থেকেই ছোট গল্পকার ও কলাম লেখক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন রেজোয়ান সিদ্দিকী। লেখাপড়া করেন সাহিত্যে। কিন্তু এইচএসসি পর্যন্ত তিনি ছিলেন বিজ্ঞানের ছাত্র।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তিনি পিএইচডি অর্জন করেন ১৯৯৫ সালে। হল্যান্ডের আইএসএস (ইনস্টিটিউট অব সোস্যাল স্টাডিজ) থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও উন্নয়ন বিষয়ে তিনি অর্জন করেছেন স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা।
লেখক হিসেবে তার চরিত্র সব্যসাচীর। তিনি লিখেছেন, উপন্যাস, গল্প, নাটক, বিজ্ঞান, প্রকৃতি-পরিবেশ, ফিকশন, অনুবাদ, সংকলন-সব কিছু মিলে অর্ধশতাধিক বই।
জেএন/পিআর