চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী কর্ণফুলী নদী লুসাই পাহাড় থেকে নেমে এসেছে। যেটি রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই হয়ে চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে গিয়ে এর স্বচ্ছ জলরাশি নিয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে।
এই নদীর দুই পাড়ের জনসাধারণকে নিত্য প্রয়োজনে নৌকা বা সাম্পানে পারাপার হতে হয়। কিন্তু শীত মৌসুমে নদীর পানি শুকিয়ে চর জেগে ওঠায় নৌকা বা সাম্পান পারাপারে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মাঝিরা। বিশেষ করে ভাটার সময় নদীর বুকে চর জেগে ওঠে বলে জানান তারা।
চন্দ্রঘোনা দোভাষী বাজার ঘাট গিয়ে দেখা যায়, নদীর মাঝখানে চর জেগেছে। এ সময় চন্দ্রঘোনা-রাইখালী নৌরুটে যাত্রী পারাপারে মাঝিদের বেশ দুর্ভোগ পোহাতে দেখা যায়। যেখানে সোজা পথ পাড়ি দিয়ে নৌকা চলাচল করতো, সেখানে অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে যাত্রীদের পারাপার করতে হচ্ছে।
এ সময় কথা হয় মাঝি মিজানুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর পানি শুকিয়ে যায়। এ সময় নদীর বুকে চর জেগে ওঠে, তাতে করে আমাদের নৌকা চালাতে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
মাঝি সুমন দে বলেন, শীতে পানি শুকিয়ে নদীতে নাব্য সংকট দেখা দেয়। ভাটার সময় নদীর বুকে চর জেগে ওঠে। যার ফলে অনেক সময় নদীতে সাম্পান আটকে যায়।
রাইখালী সাম্পান ঘাঁটের লাইনম্যান ফরিদ বলেন, নদীতে পানি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে যেখানে পানির গভীরতা আছে সেই পথ পাড়ি দিয়ে সাম্পান চলাচল করতে হচ্ছে। ফলে সময় বাড়ছে এবং জ্বালানি তেল প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে।
এই রুটে চলাচলকারী রাইখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ তালুকদার বলেন, শীতের সময় নদীর পানি শুকিয়ে যায়, যার অন্যতম কারণ নদীর নাব্য সংকট। নদীর তলদেশে মাটি দিন দিন বাড়ছে। এ সময় দুই পাড়ের মানুষের চলাচলে বেশ কষ্ট হয়ে পড়ে।
রাইখালী জুমিয়া পূনর্বাসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন কান্তি দাশ বলেন, বিশেষ করে শীত মৌসুমে নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে নৌচলাচল বিঘ্নিত হয়। আমাদেরকে ঘুরে ঘাট পার হতে হয়। এতে সময় বেশি লাগে আর জ্বালানি খরচও মাঝিদের বেশি হয়।
তিনি আরও বলেন, কর্ণফুলী নদীর পাড়ে এ জনপদে বসবাসকারী মানুষের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম এই নদী ও নৌকা বা সাম্পান। তাই এ নদী অতিদ্রুত ড্রেজিং করা হোক।
রাঙ্গামাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তনয় ত্রিপুরা বলেন, শুষ্ক মৌসুমে নদীর নাব্য সংকট দেখা দেয়। আগামীতে কাপ্তাই লেক এবং কর্ণফুলী নদীর ড্রেজিং করার পরিকল্পনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের রয়েছে।
এসএ