টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী তাঁতের শাড়িকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। বুধবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল বাসার মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বীকৃতি পেতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্পনকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়।
জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম ই-মেইলের মাধ্যমে আবেদন ও প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ পাঠান। পরে বুধবার মন্ত্রণালয়ে হার্ড কপি জমা দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক বলেন, টাঙ্গাইল শাড়ি যে কোনো বিচারে বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার দাবিদার। টাঙ্গাইল নামধারি যে কোনো পণ্যই এদেশের পণ্য। গত তিন মাস ধরে টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য ডকুমেন্টেশন কার্যক্রম চলছে। শাড়িটির আড়াইশ বছরের ইতিহাসের তথ্যাদি ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষের জীবন-জীবিকার তথ্য সংগ্রহ করে আবেদন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার পর বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থায় আপিল করা হবে। ভারত ‘টাঙ্গাইল শাড়ি অব বেঙ্গল’ নামে যে পণ্যটির জিআই পেয়েছে, এটি বাংলাদেশের স্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। চূড়ান্ত বিচারে টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবেই স্বীকৃতি লাভ করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সম্প্রতি টাঙ্গাইল শাড়িকে নিজস্ব জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়। এরপর ভারতের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী তাঁতের শাড়িকে নিজেদের পণ্য দাবি করা হয়।
এরপরই বাংলাদেশে শুরু হয় নানা ধরনের সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকেই প্রতিবাদ জানাচ্ছেন । ইতিমধ্যে ভারতের এহেন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছে টাঙ্গাইলের বাসিন্দারা।
তাঁত সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, সময়মতো বাংলাদেশ ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের আবেদন না করায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
প্রায় ২৫০ বছরের ঐতিহ্য টাঙ্গাইল শাড়ি বোনা হয় টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পোড়াবাড়ি, দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল ও কালিহাতীর বল্লা এলাকায়। এই পেশার সঙ্গে জেলাটির প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ যুক্ত রয়েছেন।