প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন সরকার গঠনের পর প্রথমবারের মতো ভারত সফরে গিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সেখানে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকেও অংশ নেন তিনি। এসময় তিস্তা চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে পুনরায় অনুরোধ করেন ড. হাছান মাহমুদ।
এ প্রসঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর জলবণ্টন চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও আপত্তি নেই। আমি আশাবাদী, একটি সমাধানে পৌঁছানো যাবে।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এদিন সন্ধ্যায় ভারতের হায়দরাবাদ হাউসে দু’দেশের মন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
হাছান মাহমুদ বলেন, “বিএনপি-জামায়াত জোট এই নির্বাচনে প্রতি পদে বাধা দিয়েছে। তারপরেও আমাদের জয় এসেছে। ফল প্রকাশের পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ফোন করে আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। গণতন্ত্র রক্ষায় আমাদের পাশে থাকার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।”
গত দশ বছরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ভিন্ন উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে অনেক বিষয়ে দু’দেশের মানুষ ভাবতেই পারতেন না। রাজনৈতিকভাবে সেগুলো ধারণা করাই ছিল অসম্ভব। কিন্তু এখন সেগুলো বাস্তব। যেমন- এক দেশ অন্য দেশের মধ্যে দিয়ে বাণিজ্যিক পণ্য চলাচল। এটি একটি প্রধান বিষয়।
এদিকে বৈঠকের পরে জয়শঙ্কর সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, তাদের আলোচনা দু’দেশের বন্ধুত্বকে আরও শক্তিশালী করবে।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে এক প্রতিবেদনে আনন্দবাজার জানিয়েছে, বৈঠকে উভয়পক্ষ সীমান্ত পাহারায় বিজিবি এবং বিএসএফের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করতে সম্মত হয়েছে। সীমান্তে মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহারেও দু’পক্ষ সম্মত হয়েছে।
একই সঙ্গে ওই বৈঠকে ঢাকা পণ্য রফতানিতে শুল্ক এবং অশুল্ক বাধা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছে। রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে নির্বিঘ্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। ওই বৈঠকে মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
এছাড়া বৈঠকে দু’দেশের মন্ত্রীরা আন্তঃসীমান্ত যোগাযোগ, অর্থনৈতিক ও উন্নয়নে জোট বাঁধা, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ক্ষেত্রে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছেন। ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’ এবং ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’ নিয়েও আলোচনা করেন তারা।
জেএন/এমআর