মিয়ানমারের রাখাইনে জান্তা বাহিনীকে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণের জন্য এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরাকান আর্মি। মঙ্গলবার আরাকান আর্মির এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে জান্তা বাহিনীর সদস্যদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহ আত্মসমর্পণের জন্য ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গত ১৩ নভেম্বর থেকে ‘ফ্যাসিস্ট’ সেনাবাহিনীর অনেকগুলো কৌশলগত ক্যাম্প, কৌশলগত ক্যাম্প, ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর, বর্ডার গার্ড স্টেশনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় একের পর এক হামলা চালিয়ে দখল করা হয়েছে। জান্তা সরকারের দখলে থাকা বাকি স্থাপনাগুলোতেও হামলা চালানো হবে। আরাকান আর্মির হামলায় টিকতে না পেরে সেনা পরিষদের সৈন্য ও পুলিশ সদস্যরা তাদের ক্যাম্প ছেড়ে ভারত ও বাংলাদেশে পালিয়ে যায়।
বিবৃতিতে মিয়ানমার জান্তার একটি যুদ্ধজাহাজ ধ্বংসেরও দাবি করেছে আরাকান আর্মি। জান্তা বাহিনীর সদস্যদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ কেউ খুঁজে পেলে তা রাখাইন গণসরকারের গভর্নর বা এলাকা কমান্ডারের কাছে জমা দিতে বেসরকারিক নাগরিকদের আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। আর এরজন্য পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছে।
গত ১৩ নভেম্বর থেকে উত্তর রাখাইন ও প্রতিবেশী দক্ষিণ চিন রাজ্যে মিয়ানমার জান্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে আসছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। গোষ্ঠীটি বলছে, রাখাইনের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ও সেনা সদরদপ্তরের দখল নিয়েছে তারা।
সামরিক জান্তা ও বিদ্রোহীদের এ সংঘর্ষে বাংলাদেশ সীমান্তেও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। মিয়ানমার থেকে আসা গোলার আঘাতে একজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। দিনভর সংঘর্ষ, আর ওপার থেকে ভেসে আসা তীব্র গোলা–বারুদের শব্দে আতঙ্ক কাটছে না মিয়ানমার সীমান্তে থাকা বাংলাদেশি জনপদগুলোতে।
আরাকান আর্মির সঙ্গে চলমান সংঘাতে টিকতে না পেরে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিচ্ছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী–বিজিপির সদস্যরা। এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের ৩৩০ জন বিজিপি ও সেনা সদস্যসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, তাদের ফেরত পাঠানোর কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
উত্তর রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এখন দক্ষিণ রাখাইনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। জান্তা বাহিনীর কাছ থেকে মিয়ানমারের ঐতিহাসিক শহর ম্রউক উর দখল নেওয়ারও দাবি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। রাখাইন রাজ্যে অবস্থিত ম্রউক উর শহর থেকে কক্সবাজার সীমান্তের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার।
বিজিবি বলছে, গত কয়েক দিনে শতাধিক রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঠেকানো হয়েছে।
জেএন/এমআর